পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর

পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর

ফাইল ফটো

দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য গবেষক, বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, পেঁয়াজে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। দেশে পেঁয়াজ নিয়ে সঙ্কট চলছে। এ সঙ্কট কীভাবে মোকাবেলা করা যায় এবং কতদিনের মধ্যে উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া যাবে সে বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে একসাথে বসে শিগগিরই কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হবে।

বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কৃষিমন্ত্রী (অনলাইনে) এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি এবং কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আমাদের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে হবে। সরকার পক্ষ থেকে পেঁয়াজ চাষিদের বীজ, উপকরণ, প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। এ বিষয়ে কৃষকদের সাথে আলোচনা করতে হবে, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আগামী গ্রীষ্মকালে দেশের কোনো উপজেলায় কতজন চাষি পেঁয়াজ আবাদ করবে তার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। এসময় কৃষিমন্ত্রী আগামী ১- ২ মাসের মধ্যে কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন, পেঁয়াজ বীজের চাহিদা নিরূপণ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় বর্তমান সরকার সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ বিতরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। কৃষি উপকরণ নিয়ে দেশে এখন কোনো হাহাকার নেই, সঙ্কট নেই। কৃষকেরা সার, বীজসহ এসব উপকরণ সময়মতো, অত্যন্ত সহজে ও কোনো ঝামেলা ছাড়াই পেয়ে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে বারি’র মহাপরিচালক ড. মোঃ নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোঃ বখতিয়ার, বারি’র পরিচালক ড. মোঃ মিয়ারুদ্দীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ফসলের নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা অর্জনে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত গম, ভুট্টা, যব, কাউন, চীনা, কন্দাল জাতীয় ফসল, ডাল ফসল, তেল ফসল, উদ্যান জাতীয় ফসল ও মসলা ফসলের ৫৮৫টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ) উন্নত জাত এবং ৫৫১টি অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে মোট ১১৩৬টি যার মধ্যে অনেক প্রযুক্তি বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে কৃষক কর্তৃক ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বর্তমান সরকারের বিগত মেয়াদে এবং বর্তমান মেয়াদের এ পর্যন্ত (২০০৯-২০২০ জুন) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গম, ভুট্টা, আলু, ডাল ও তেলবীজ, শাক-সব্জী, ফল, ফুল ও মসলাসহ বিভিন্ন ফসলের ২৮০টি উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত ও হাইব্রীড এবং প্রায় ২৭০টি উন্নত ফসল ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ সকল প্রযুক্তি দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন, আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।