৬৭ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে মহিলার মৃত্যুদণ্ড

৬৭ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে মহিলার মৃত্যুদণ্ড

লিসা মন্টেগোমরি। ছবি: রয়টার্স।

৬৭ বছর পর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে এক মার্কিন মহিলাকে। শেষ ১৯৫৩ সালে শিশু চুরির দায়ে মিসৌরির এক গ্যাস চেম্বারে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল বনি হেডি নামের এক মার্কিন মহিলার। চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর  করা হবে লিসা মন্টেগোমরি নামের এক মহিলার। এ বার বিষাক্ত ইঞ্জেকশন। শুধু খুন নয়, ২০০৪-এ এক অন্তঃসত্ত্বাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাঁর পেট কেটে গর্ভস্থ শিশু চুরি করে। এই অপরাধে লিসাকে ২০০৭-এই দোষী সাব্যস্ত করেছিল পশ্চিম মিসৌরির জেলা আদালত। এমনকি মৃত্যুদণ্ডও দিয়েছিল। এত দিন তার প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নিয়ে টালবাহানা চলছিল। শুক্রবার মার্কিন বিচার বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিল, মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকছে লিসার। ১৬ বছর আগের ওই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেন, ‘এমন ঘৃণ্য অপরাধের কথা শুনলে যে কোনও সুস্থ মানুষই শিউরে উঠবেন।’

দীর্ঘদিন মৃত্যুদণ্ড বন্ধ ছিল আমেরিকায়। ১৯৭২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলে, ফেডারেল কিংবা আঞ্চলিক আদালত মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করতে পারবে না। চার বছর পরে সেই নিষেধাজ্ঞা কিছুটা লঘু করে বলা হয়, ফেডারেল আদালত এই সাজা শোনাতে পারবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ২০১৮ সালে আবার সেই অধিকার পায় আঞ্চলিক আদালত। তার পর এই প্রথম কোনও মহিলাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল।

মার্কিন বিচার বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে ওই খুন এবং গর্ভস্থ শিশু চুরির কথা। ২০০৪ সালে ওই ঘটনার সময়ে লিসার বয়স ছিল ২৩ বছর।  নিজের গাড়ি করে ক্যানসাস থেকে মিসৌরির বাসিন্দা ববি জো স্টিনেটের বাড়িতে যায় লিসা। কুকুর কিনতে চেয়ে স্টিনেটের একটি অলনাইন বিজ্ঞাপন সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় লিসার।

ঘটনার দিন, বাড়িতে ঢুকেই সে হঠাৎ আক্রমণ করে বসে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্টিনেটকে। বিছানায় তাঁর গলা টিপে প্রথম শ্বাসরোধ করে খুন এবং পরে রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে স্টিনেটের পেট চিরে গর্ভস্থ শিশুকে বার করে পালিয়ে যায় লিসা। পরে এই শিশুটিকে নিজের বলে চালানোর চেষ্টাও করে সে। লিসা শৈশবে যৌন হেনস্থার শিকার এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ— এই যুক্তিতে বারবার তার হয়ে ক্ষমা ভিক্ষার আবেদন জানাচ্ছিলেন লিসার আইনজীবীরা।