মঙ্গলে পানিতে ভরপুর ছিল প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে!

মঙ্গলে পানিতে ভরপুর ছিল প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে!

প্রতীকী ছবি।

বর্তমানে নয়, হাজার বা লক্ষ বছর আগেও নয়। মঙ্গলে পানির উৎপত্তি হয়েছিল আনুমানিক ৪৪০ কোটি বছর আগে। উল্কাপিণ্ডের অংশ পর্যবেক্ষণ দেখে এমনটাই দাবি করেছেন জাপানের একদল বিজ্ঞানী। ফলে সম্প্রতি মঙ্গলগ্রহ নিয়ে গবেষণায় সেখানে যে তিনটি পানিরধারার চিহ্ন পাওয়া গেছে, তা কি এত কোটি বছর আগেকারই? 

কিন্তু উল্কার সঙ্গে মঙ্গল গ্রহের কী সম্পর্ক? বুঝিয়ে বলা যাক। বেশ কিছু বছর আগে সাহারা মরুভূমি থেকে বিজ্ঞানীরা একজোড়া উল্কাপিণ্ড আবিষ্কার করেছিলেন। ওই প্রাচীন উল্কাপিণ্ডগুলির নামকরণ করা হয়েছিল যথাক্রমে এনডাব্লিউএ৭০৩৪ এবং এনডাব্লিউএ৭৫৩৩। দফায় দফায় নানাবিধ পরীক্ষানিরীক্ষার পর জানা যায়, সেই উল্কাপিণ্ডগুলি আদপে মঙ্গল গ্রহজাত। কারণ, তাতে যে ধরনের শিলাসমূহের উপস্থিতি রয়েছে, তা কেবলমাত্র পৃথিবীর পড়শি গ্রহটিতেই মেলে।

এই ধরনের শিলা অতি-বিরল শ্রেণির। বিক্রি হলে প্রতি গ্রামে দাম উঠতে পারে ১০,০০০ ডলার পর্যন্ত। সম্প্রতি এর মধ্যে এনডাব্লিউএ৭৫৩৩ পিণ্ডটির ৫০ গ্রাম অধিগ্রহণ করা হয় আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দলের পক্ষে, আরও ভালভাবে পরীক্ষা করার জন্য। ওই দলেই ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ টোকিওর অধ্যাপক তাকাশি মিকৌচি। গবেষণার পরে মিকৌচি বলছেন, “আমরা ওই নমুনা নিয়ে চারটি আলাদা আলাদা স্পেকট্রোস্কোপিক পরীক্ষা করেছি। আর তাতেই মিলেছে অভূতপূর্ব ফলাফল।” মিকৌচির দাবি, শিলার গঠন সংক্রান্ত ওই পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে মঙ্গল গ্রহে পানির উৎপন্ন হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু অন্তত ৪৪০ কোটি বছর আগে। তাঁর পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামের জার্নালে।

এতদিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, মঙ্গলে পানির উৎপত্তি হয় অন্তত ৩৭০ কোটি বছর আগে। মিকৌচি ও তাঁর দল জানিয়েছে, উল্কাপিণ্ডগুলিতে যে আগ্নেয় শিলা মিলেছে, তার উৎপত্তি হয়েছে ম্যাগমা থেকে। এতে শিলার জারণ হয়েছে বলে প্রমাণও মিলেছে। কিন্তু এই জারণ প্রক্রিয়া তখনই সম্ভব, যখন সেখানে পানির অস্তিত্ব থাকবে। জাপানি বিজ্ঞানীর এই রিপোর্ট লাল গ্রহ সম্পর্কে কৌতূহল আরও উসকে দিল, তা বলাই বাহুল্য।