ইবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

ইবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

নিজস্ব প্রতিনিধি

দলীয় কর্মীকে মারধরের জেরে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ছাত্রদের আবাসিক হল এলাকায় থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে তিনজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। 

সংঘর্ষ চলাকালে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের হাতে লোহার রড, রামদা, জিআই পাইপ, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের নেতৃত্বে প্রায় ২০/২৫ জন নেতাকর্মী সাদ্দাম হোসেন হলের ২৩৫ নং কক্ষে যায়। তারা রুমের দরজায় লাথি মারতে থাকলে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের কর্মী মোশাররফ হোসেন নীল রুম থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর রাকিবের নেতৃত্বে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সুমনসহ অন্যান্যরা নীলকে শাসাতে থাকে। একপর্যায়ে নীলকে চড়-থাপ্পড় মারে তারা।

 

পরে নীল তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের জানালে আলমগীর হোসেন আলোর নেতৃত্বে তারা সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে আসে। এ সময় সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সুমনসহ নেতাকর্মীরাও সাদ্দাম হলের সামনে আসে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিদ্রোহী গ্রুপের কর্মীরা সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের মারধর শুরু করে। এতে সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা জিয়া মোড়ে অবস্থান নেয়।

এ সময় উভয় গ্রুপের কর্মীরা পরস্পরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে শেখ রাসেল হলের সামনে তাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। বিদ্রোহী গ্রুপের ধাওয়া খেয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা আবাসিক হলের ভেতর গিয়ে কলাপসিবল গেট আটকে দেয়।

এ সময় উভয়পক্ষের কাছে দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠিসোটা দেখা যায়। ঘটনার একপর্যায়ে জিয়া মোড়সহ লালন শাহ হল ও জিয়া হলের সামনে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন ও সহকারী প্রক্টর এস এম নাসিমুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, এ ঘটনাটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটিকে পুঁজি করে কিছু অছাত্র ও বহিরাগত ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা তন্ময় সাহা টনি বলেন, শোকের মাসে সাধারণ সম্পাদক খাবাররত অবস্থায় আমাদের দুই কর্মীকে মারধর করেছে। আমরা এর কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরবর্তীতে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলি। সবাই এখন নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।