মহাশূন্যে মুলাচাষ করছে নাসার বিজ্ঞানীরা!

মহাশূন্যে মুলাচাষ করছে নাসার বিজ্ঞানীরা!

ছবি: নাসার ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই বললেই চলে। সেই মহাশূন্যেই এ বার মুলাচাষ করে ফেলল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন’ (আইএসএস) নামের যে কৃত্রিম উপগ্রহ দীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে, তাতেই এই চমকপ্রদ পরীক্ষায় সফল হয়েছে তারা।  

পৃথিবী থেকে চাঁদ ও মঙ্গলে জনবসতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়িত করতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন বিজ্ঞানীরা। তার জন্য পরিবার পরিজনদের ছেড়ে মাসের পর মাস মহাশূন্যেই কেটে যায় নভোচারীদের। সেখানে তাঁরা যাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পান তার জন্য মহাশূন্যে চাষবাসের চেষ্টা চলছিল বহু দিন ধরেই।

এত দিনে মুলাচাষের মাধ্যমে তাতে সাফল্য পেলে। আইএসএস-এর কলম্বাস ল্যাবরেটরি মডিউলের প্লান্ট হ্যাবিটাট-২-তে বীজ থেকে গাছ গজিয়ে ওঠার ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। তাতে চৌকো একটি চৌকো আকারের একটি বাক্সে নানা ধরনের তারের মাঝখানে ২০টি সবুজ পাতা সম্বলিত চারাগাছ দেখা গেছে।

এত রকমের ফসল থাকতে বেছে বেছে মুলাচাষই কেন করা হল, তার সপক্ষেও যুক্তি দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, মুলাচাষ করতে খুব বেশি সময় লাগে না। মুলা কাঁচাই চিবিয়ে খাওয়া যায়। আবার এর পুষ্টিগুণও বেশি। তাই মহাশূন্যে মুলাচাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর কিছু দিন পরেই মাটি খুঁড়ে মুলা তোলা হবে। পরীক্ষার জন্য তার নমুনা পাঠানো হবে পৃথিবীতে।

তবে মহাকাশে মুলাচাষ মোটেই সহজসাধ্য কাজ ছিল না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকায় শিকড় মাটিতে প্রবেশ করার উপায় ছিল না। তাই প্রথমে মাটির ‘বালিশ’ তৈরি করে তাতে বীজ পুঁতে দেওয়া হয়। তা থেকে চারা বেড়ে ওঠে। এই পদ্ধতিতে সমস্ত গাছ সমান পানি এবং সারও পায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, নীল এবং লাল আলোতেই গাছ সবচেয়ে ভাল সাড়া দেয়। সেই মতো ওই বাক্সের মধ্যে এলইডি আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। ১৮০-র বেশি সেন্সর বসানো রয়েছে। ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে গাছের বৃদ্ধিতে নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা। প্রয়োজন বুঝে পানি, সার এবং তাপমাত্রার রদবদলও তাঁদের নজরদারিতেই হয়। আনন্দবাজার