আনুষ্ঠানিক ভাবে ইইউ থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করল যুক্তরাজ্য

আনুষ্ঠানিক ভাবে ইইউ থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করল যুক্তরাজ্য

ছবি: রয়টার্স

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমার্ক ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে নতুন যুগের সূচনা হলো যুক্তরাজ্যের। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে যুক্তরাজ্য ইইউ’র নিয়মনীতির অনুসরণ বন্ধ করে দেয়। এদিকে ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন ও নিরাপত্তা সহযোগিতার বিকল্প নীতিমালা কার্যকর হয়েছে যুক্তরাজ্যে। 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, যুক্তরাজ্যের ছিল ‘আমাদের হাতে স্বাধীনতা’ ও কাজগুলো ‘আলাদাভাবে ও আরো ভালোভাবে’ করার সক্ষমতা। সুদীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া এখন শেষ হলো।’

৪৮ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট গণভোটে যুক্তরাজ্যের জনগণ ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষ ভোট দেয়।

অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভোটের সাড়ে তিন বছর পর এবং ইইউতে যোগ দেয়ার প্রায় ৪৭ বছর পর যুক্তরাজ্য গত ৩১ জানুয়ারি ২০২০ আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭টি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোটটি বর্জন করে। তবে উভয় পক্ষ তাদের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ায় গত ১১ মাস ধরে এটি ইইউ’র বাণিজ্যিক নীতিমালাকে স্থবির করে রেখেছিল।

বাণিজ্য নিয়ে দীর্ঘদিনের এই আলোচনার অবসান হলে অবশেষে বড়দিনে উভয় পক্ষের মধ্যে যুগান্তকারী এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সর্বশেষ পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়ে বুধবার এটি যুক্তরাজ্যের আইনে পরিণত হলো।

ইউরোপের কেন্দ্রীয় সময় ২৪:০০ টায় কার্যকর হওয়া নতুন ব্যবস্থার অধীনে যুক্তরাজ্যের নির্মাতারা ইইউ’র অভ্যন্তরীণ বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবেন। যার মানে হলো ব্রিটেন ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য ক্রয়ে কোনো আমদানি শুল্ক থাকবে না। তবে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোতে ভ্রমণ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে আরো কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রধান অংশীদার ব্যাংকিং ও সেবা খাতে কী হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

এটা এমন একটি মুহুর্ত, যখন ব্রেক্সিট নিয়ে অনেকে ব্যাপক আশাবাদী। আবার এটিকে গভীর অনুশোচনার সাথে বিবেচনা করছেন অনেকে। নির্ধারিত এক সময়ে এই ঐতিহাসিক যাত্রা সূচিত হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে এর প্রভাব অন্যগুলোর চেয়ে খানিকটা কম স্থায়ী ও সুস্পষ্ট হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ধারণা করা হচ্ছে সীমান্তে নতুন করে চেকিং শুরু হওয়ায় ২০২১ সালের প্রথম দিনে ডোভারে অপেক্ষাকৃত কম যানবাহন থাকবে।

তবুও এখানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন রয়েছে। বাণিজ্য, ভ্রমণ, নিরাপত্তা বা অভিবাসন যে বিষয়েই হোক না কেন। যেহেতু করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখনো কমেনি, তাই আপাতত, সমাজের বেশিরভাগ অংশ বন্ধ রাখার জন্য এই পরিবর্তনগুলো ফলপ্রসু হতে পারে। তবে সামনের মাসগুলোতে এটি আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। সূত্র : বিবিসি