বন্ধ ক্যাম্পাসে ও সক্রিয় কুবি আইটি সোসাইটি

বন্ধ ক্যাম্পাসে ও সক্রিয় কুবি আইটি সোসাইটি

ফাইল ছবি

মহামারী! করোনা! থমকে গেছে পুরো বিশ্ব। থেমে গেছে সবার জীবনযাত্রা। চীনের উহানে শুরু হওয়া বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সবকিছু যেমন থেমে গেছে একইভাবে থেমে গেছে শিক্ষা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৮'ই মার্চ সর্বপ্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় বাংলাদেশে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারি সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় বন্ধ হয়ে যায় লাল মাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলেও অনলাইনে বিভিন্ন কার্যক্রম সক্রিয় রেখেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি। বিভিন্ন ধরনের ট্রেইনিং প্রোগ্রাম, কুইজ প্রতিযোগিতা সহ নানা কার্যক্রমে আয়োজন করেছে এই সংগঠন। করোনাকালীন বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে এই প্রতিবেদন,
 
করোনাকালীন কার্যক্রম:
 
◼️অনলাইন গ্রাফিক ডিজাইন কোর্সঃ
 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও অংশগ্রহণ করে। প্রায় ১ মাস এই কোর্স চলে। এই কোর্সে ২ টি ব্যাচ ছিল, যেখানে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে অংশগ্রহণকারী ছিল। এবং একটি অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে অংশগ্রণকারীদের মূল্যায়ন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের সবাইকে আইটি সোসাইটির পক্ষ থেকে সার্টিফিকেইট প্রদান করা হয়। এবং সেরা ৩ জনকে সোসাইটির পক্ষ থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়।
 
◼️মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে কুইজ কনটেস্টঃ
 
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্মরণে এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে এই কুইজ কনটেস্টের আয়োজন করা হয় যেখানে প্রায় ৭০ অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। বিজয়ী প্রথম ৩ জনকে আইটি সোসাইটির পক্ষ থেকে সার্টিফিকেইট এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়।
 
◼️অনলাইনে ভিডিও ইডিটিং কোর্সঃ
 
গ্রাফিক ডিজাইন কোর্সের মত করে পরিচালনা করা হয়। এবং এই কোর্সেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া ভিক্টরিয়া কলেজ,সাস্ট সহ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা অংশগ্রহন করেন।
 
◼️মিট আপ উইথ আইটি প্রফেশনাসঃ
 
দেশ ও দেশের বাহিরের কয়েকজন আইটি প্রফেশনালদের সাথে অনলাইন আড্ডার আয়োজন করা হয় এই সেশনে। যেখানে প্রফেশনালরা এবং শিক্ষার্থীরা সরাসরি তাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।এর মধ্যে একজন ছিলেন জার্মান থেকে। উনি জার্মানিতে একটা সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন,এছাড়াও বাংলাদেশের আইটি প্রফেশনালরা ছিলেন।
 
◼️আইটি স্কিল ডেভলাপমেন্ট প্রোগ্রাম উইথ লিও ক্লাবঃ
 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় লিও ক্লাবের শিক্ষার্থীদের সাইবার সিকিউরিটির সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে এই সেশন আয়োজন করা হয়।দীর্ঘ ২ ঘন্টার এই সেশনে ফেইসবুক,ইমেল, গুগুল ক্লাউড এর নিরাপত্তা সহ মোবাইল ব্যাংকিং ও ই-কমার্স স্কেম এবং কিভাবে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস এর আক্রমণ থেকে নিজদের মোবাইল ,কম্পিউটারের সুরক্ষা দেওয়া যায়,এইসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
 
◼️ট্রেইনিং ফর তানিন মেহেদীঃ
 
মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত বিশ্বাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিনকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের লক্ষে বেসিক আইটির একটি অনলাইন ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়।এই ওয়ার্কশপের সম্পূর্ণ টাকা তানিনের চিকিৎসার জন্য প্রদান করা হয়।
 
◼️অনলাইন লাইব্রেরিঃ
 
বর্তমানে অনুষদ ভিত্তিক কো-অর্ডিনেটর বাছাইয়ের কাজ চলছে।এছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন লাইব্রেরি(জ্ঞানঘর) নিয়ে কাজ চলছে ,যা প্রায় ৮০ ভাগ শেষ।এই অনলাইন লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় সকল বইয়ের পিডিএফ পাবে এবং নিজেরা ব্লগ লিখতে পারবে।
 
বন্ধ ক্যাম্পাসে সফল ভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে পেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির সভাপতি মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, করোনার এই অপ্রত্যাশিত আক্রমন আমাদের জীবনযাত্রা অনেকটা স্থবির করে দিলেও আমাদের জন্য তথ্য প্রযুক্তির অনেক বড় সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসে।এই অবসর সময়ে শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের স্কিল ডেভলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে পারে আমরা তাদের সেই সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্ট করি।শিক্ষার্থীরাও নিজেদের আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসে, যার ফলে আমরা আমাদের কার্যক্রমগুলো সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছি।ভবিষ্যতেও আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখব,ইনশাআল্লাহ।