ভারতের টিকা রফতানি বন্ধ, উদ্বেগে বাংলাদেশ

ভারতের টিকা রফতানি বন্ধ, উদ্বেগে বাংলাদেশ

ছবি : প্রতীকী

সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি টিকা ভারতের বাইরে রফতানির নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার। এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করেছে বাংলাদেশ তা সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা ছিল। রোববার বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছিল করোনা টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ছয় শ’ কোটি টাকা সেরামের একাউন্টে জমা দেয়া কথা ছিল।

কিন্তু সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা আদার পুনেওয়ালার বরাত দিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবং ভারত ও বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তারা এই মুহূর্তে টিকা রফতানি করতে পারছে না।

ভারতীয় একটি বাণিজ্য বিষয়ক টিভি চ্যানেল সিএনবিসি টিভি এইটিন-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে পুনেওয়ালা বলেন, এখনো এ বিষয়ে তারা কোনো লিখিত নির্দেশনা না পেলেও কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের যে লাইসেন্স রয়েছে ওই অনুযায়ী এই মুহূর্তে আমরা রফতানি করতে পারবো না এবং খোলা বাজারেও বিক্রি করতে পারবো না। তবে আমাদের কাছে ভারত সরকারসহ সবাইকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের মজুদ রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাছ থেকেই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানতে পারি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে, তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। আমরা এ নিয়ে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সাথে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে আমাদের টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করি।’গত ২ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয় ভারতের সরকারভ্যাকসিন রফতানি নিয়ে এরমধ্যেই সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও মরক্কোর সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য ছয়’শ কোটি টাকার বেশি জমা দেয়ার কথা এরমধ্যেই জানিয়েছে দেশটি। বিনিময়ে সিরাম ইনস্টিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে।

এর আগে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছিল, চুক্তির ধারা অনুযায়ী তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে বাংলাদেশ অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনার কথা ছিল।চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ইন্সটিটিউট ছয় মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। তার মধ্যে প্রতিমাসে আসবে ৫০ লাখ টিকা। আর উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সিরাম ইন্সটিটিউট এক বিলিয়ন ডোজ তৈরি করার কথা রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি