মস্কোতে আজারবাইজান, আর্মেনিয়া ও রাশিয়ার বৈঠক

মস্কোতে আজারবাইজান, আর্মেনিয়া ও রাশিয়ার বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে সোমবার এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আজারবাইজান, আর্মেনিয়া ও রাশিয়ার সরকার প্রধানরা মিলিত হচ্ছেন। রোববার ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পেশিনিয়ান এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে ১০ নভেম্বরের নাগরনো-কারাবাখ যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন সম্পর্কে আলোচনা করবেন। বাকু ও ইয়ারভানের মধ্যকার ৪৪ দিনের সেপ্টেম্বর যুদ্ধ ১০ নভেম্বর এই চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তিটির পুনঃমূল্যায়ন ও এই অঞ্চলের বিরাজমান সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনার জন্য এই বৈঠক করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সহায়তা দেয়া ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও পরিবহন সংযোগ উন্নয়ন সম্পর্কেও এই বৈঠকে আলোচনা করা হবে।

বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের পৃথক বৈঠকের আশা করা হচ্ছে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৯৯১ সালে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত নাগরনো-কারাবাখ ও এর কাছের আরো সাতটি অঞ্চল ১৯৯৪ সালে আর্মেনিয়া দখল করে নিলে এই উত্তেজনা নতুন দিকে মোড় নেয়।

২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী আজারবাইজানের সাধারণ নাগরিক ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা শুরু করলে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হয়। ৪৪ দিনের যুদ্ধে বাকু আর্মেনিয়ার দখলে থাকা বিভিন্ন কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং তিন শ’র বেশি গ্রাম ও বসতি মুক্ত করে। এ যুদ্ধের আগে প্রায় তিন দশকের মতো আজারবাইজানের ২০ শতাংশ ভূখণ্ড আর্মেনিয়ার দখলে ছিল।

যুদ্ধে আজারবাইজানের দুই হাজার ৮০২ সৈনিক নিহত হয়েছে। অপরদিকে আর্মেনীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্তত পাঁচ হাজার আর্মেনিয়ার সৈনিক এই যুদ্ধে নিহত হয়েছে।

৪৪ দিনের যুদ্ধের পর ১০ নভেম্বর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় উভয় দেশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী নাগরনো-কারাবাখসহ আর্মেনিয়ার অধিকৃত সব আজারবাইজানি ভূখণ্ড থেকে আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীকে সরিয়ে নিতে সম্মত হয় দেশটি। এই চুক্তিকে আজারবাইজানের জয় এবং আর্মেনিয়ার পরাজয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতি তদারকের জন্য রাশিয়া ও তুরস্কের যৌথ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।
সূত্র : ইয়েনি শাফাক