পিরোজপুরে হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পিরোজপুরে হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি : সংগৃহীত

পিরোজপুরে হচ্ছে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এ লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর আইন, ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের নীতিগত অনুমোদন দিতে ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কাছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এর যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যেতে পারে বলে সায় দেয়। এ লক্ষ্যে ‘পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে সরকার।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি সরকারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হলে মোট ৪৭টি সরকারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রগুলোর মতে, দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অনেক যৌক্তিকতা রয়েছে। কারণ, এ জেলার পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট ও ঝালকাঠি জেলায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। বিভাগীয় শহর বরিশালে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়) থাকলেও কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তবে পটুয়াখালী জেলায় একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় (পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) থাকলেও পটুয়াখালী পিরোজপুর জেলার নিকটবর্তী নয়। তা ছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় পিরোজপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন যথার্থ হবে।
এটি প্রতিষ্ঠিত হলে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অধিক সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পিরোজপুরে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা গবেষণার বিস্তার ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। প্রস্তাবিত পিরোজপুরে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এ অঞ্চলসহ আশপাশের জেলায় উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হবে। আইনটি পাস হলে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কার্যক্রমও শুরু হবে।

পিরোজপুরে পছন্দসই যে কোনো জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হবে।

জানা গেছে, পিরোজপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গ্রিন সিগন্যালের পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আইনের খসড়া তৈরি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে সবার মতামতও নেওয়া হয়। এখন এটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। এরপর জাতীয় সংসদে আইন পাস হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্থাপনের কাজও শুরু হবে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবনী সুযোগ সৃষ্টি, সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান ইত্যাদি ব্যবস্থা থাকবে। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এই বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়েও চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং অন্যান্য কর্মকর্তা থাকবেন। সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অন্যান্য সংস্থা নির্ধারণেরও কথা বলা হয়েছে খসড়ায়। বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিজিটিং অধ্যাপক, ইমেরিটাস অধ্যাপক, পরামর্শক, গবেষণা সহকারী, স্কলার বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে বিভিন্ন বাছাই বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ করা যাবে।