পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ জিপিএ-৪

পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ  জিপিএ-৪

ফাইল ছবি।

পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ প্রবর্তনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জিপিএ-৪ প্রবর্তনে  রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। 

কর্মশালায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অংশগ্রহণ করেন। 

সারাবিশ্বে পরীক্ষার ফলের মানদণ্ড জিপিএ-৪ প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে তা জিপিএ-৫। বহির্বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থায় জিপিএ-৫ এর প্রচলন না থাকায় এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও জিপিএ-৪ মানদণ্ডে ফল প্রকাশ হওয়ায় বিদেশে পড়াশোনা এবং চাকরির বাজারে উদ্ভুত সমস্যা নিরসনেই মূলত গ্রেড পয়েন্ট কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত জুনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠায় আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সাব কমিটি। এ প্রস্তাবনা নিয়েই পাবলিক পরীক্ষার ফল জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ প্রবর্তনের লক্ষ্যেই এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

 জানা যায়, সভায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব কমিটির প্রস্তাবনা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এছাড়া শুধু গ্রেডিং সিস্টেমটা পরিবর্তনই নয় পরীক্ষায় মার্কিং সিস্টেমের মান নিয়েও আলোচনা হয়েছে কর্মশালায়। একই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষক ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করছেন। যার ফলে ভুক্তভোগী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আগামী বছর যে কোন একটি পাবলিক পরীক্ষার ফল জিপিএ-৪ দণ্ডে প্রকাশের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।  

গ্রেড পরিবর্তন প্রস্তাবনা শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। জেএসসি-জেডিসি, এসএসসি-সমমান, এইচএসসি-সমমান পরীক্ষায় নম্বরের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ করা। এ ক্ষেত্রে ৯০-১০০ পর্যন্ত এ প্লাস জিপিএ-৪, ৮০-৮৯ পর্যন্ত ‘এ’ জিপিএ-৩ দশমিক ৫, ৭০-৭৯ ‘বি’ প্লাস জিপিএ-৩, ৬০-৬৯ ‘বি’ জিপিএ-২ দশমিক ৫, ৫০-৫৯ ‘সি’ প্লাস জিপিএ-২, ৪০-৪৯ ‘সি’ জিপিএ-১ দশমিক ৫, ৩৩-৩৯ ‘ডি’ জিপিএ-১ এবং শূন্য থেকে ৩২ ‘এফ’ গ্রেড জিপিএ-০ বা ফেল নির্ধারণ করা হয়েছে।

সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার ফলের মানদণ্ড জিপিএ-৪ থাকায় আমরা চেষ্টা করছি পাবলিক পরীক্ষার গ্রেডিং সিস্টেমটা জিপিএ-৪ এ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। শুধুমাত্র গ্রেডিং সিস্টেম নয় আমাদের পুরো মার্কিং সিস্টেমকেও স্ট্যান্ডার্ড করার একটা প্রক্রিয়া আছে। সে প্রক্রিয়াকে যদি আমরা এ বিষয়টির সাথে সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে এ পরিবর্তন অর্থবহ হবে। আর শুধু পাবলিক পরীক্ষায় নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাতেই আমরা এ পরিবর্তনটা আনতে চাই।  

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেন, হয়তো এ বছর থেকে এ পরিবর্তন সম্ভব হবে না। তবে, যতদ্রুত সম্ভব প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে হয়তো আগামী বছর কোন একটি পরীক্ষা থেকে এ পরিবর্তিত প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু কোন পরীক্ষা থেকে পরিবর্তন আনা হবে তা এ মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থায় যখন এ পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি আমরা নিতে পারবো তখনই এ পরিবর্তিত পদ্ধতি চালু হবে।