টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানো, রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকুন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানো, রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকুন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানো ও রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকাটি জীবন রক্ষার অন্যতম সরঞ্জাম হওয়ায় এটি নিয়ে যারা রাজনীতি এবং মানুষের জীবন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তাদের টিকাটি সম্পর্কে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত না করারও অনুরোধ করেন তিনি।

ভারতের উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ২০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ আহ্বান জানান মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে টিকাগুলো হস্তান্তর করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘দেশকে পোলিওমুক্ত করা হয়েছে। জনগণ টিকা এবং এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে খুব ভালো করে জানে।’

মন্ত্রী জানান, সরকার আগামী ছয়-সাত দিনের মধ্যে টিকাদান কর্মসূচির একটি পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি আরো জানান, ভারত থেকে এই টিকার আরও ৫০ লাখ ডোজ চলতি মাসের মধ্যেই দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, চুক্তি অনুসারে আগামী ছয় মাসের প্রতি মাসেই টিকার ৫০ লাখ ডোজ করে আসার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম টিকাদান কর্মসূচির অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য ভারত সরকার, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের জনগণকে ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটি এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা আজ খুব আনন্দিত। আমরা টিকা পেয়েছি এবং এটি সংরক্ষণ করছি। বন্ধুরা প্রয়োজনে একে অপরকে সহায়তা করে, আজ এটি প্রমাণিত হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিজনিত কারণে সমগ্র বিশ্ব এবং বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘১৯৭১ সাল থেকে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, ভারত আমাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে,’ বলেন তিনি। জাহিদ মালেক বলেন, ভারতের এই উপহারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে।

‘কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দিকে তাকান! বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় রয়েছে। আমাদের অর্থনীতি এখনও সচল, এখানে জীবন প্রায় স্বাভাবিক,’ বলেন তিনি।

এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি চার্টার্ড ফ্লাইট ভারতের ২০ লাখ ডোজ টিকা নিয়ে বেলা ১১টা ২১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বাংলাদেশে টিকা পাঠানোর আগ মুহূর্তে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ‘ভ্যাকসিনমৈত্রী’ লিখে এক টুইট বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পুনরায় নিশ্চিত করল ভারত।

বাংলাদেশ এবং ভারত বন্ধু হিসেবে একসাথে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

সূত্র : ইউএনবি