আসামে অনুপ্রবেশকারী ৭০ হাজার অভিবাসী ‘নিরুদ্দেশ’!

আসামে অনুপ্রবেশকারী ৭০ হাজার অভিবাসী ‘নিরুদ্দেশ’!

ফাইল ছবি।

চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশের আগেই বাংলাদেশের প্রতিবেশি রাজ্য আসামের ৭০ হাজার অনুপ্রবেশকারী ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে গেছে। ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টকে এমন তথ্য জানিয়েছে আসাম সরকার। শুনে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করে ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ প্রশ্ন রাখেন, ‘ঘোষিত অনুপ্রবেশকারীরাই যদি এ ভাবে ভ্যানিশ হয়ে যায়, তাহলে পরে কী হবে?’

আনন্দবাজার জানায়, গত বছরের ৩০ জুলাই আসাম থেকে কথিত অবৈধ বাংলাদেশি তাড়াতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করা হয়। তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন আসামের প্রায় ৪০ লক্ষ নাগরিক। এর মধ্যে আবার ৭০ হাজার আসামবাসীকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়। সোমবার ডিটেনশন ক্যাম্প সংক্রান্ত মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে।

শুনানিতে সরকারের পক্ষে আইনজীবী তুষার মেহতা জানান, ফরেনার্স ট্রাইবুনাল ৭০ হাজার আসামবাসীকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু দেশে ফেরত পাঠানোর আগেই তারা উধাও হয়ে গেছে। তার মতে, ‘৭০ হাজার চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী সম্ভবত সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছে।’

এই তথ্য শুনে প্রচণ্ড বিরক্ত হন প্রধান বিচারপতি। তুষার মেহতাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেন, তাহলে এখনও যাঁদের নাগরিকত্ব যাচাই চূড়ান্ত হয়নি, তাঁদের কী হবে।

এ দিনের শুনানিতে আসামের মুখ্যসচিবকে এজলাসে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু মুখ্যসচিব ছিলেন না। এ নিয়েও আসাম সরকারকে তুলোধোনা করেন শীর্ষ আদালত। এ নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘আপনার সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে ছেলেখেলা করছে। আপনার হলফনামা অসম্পূর্ণ। আপনাদের অসহযোগিতার জন্য সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারি আমরা। সেটা করব কি? জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করব?’

মেহতা শেষ পর্যন্ত আদালতকে আশ্বস্ত করতে বলেন, আগামী শুনানিতে অবশ্যই মুখ্যসচিব আদালতে হাজির থাকবেন এবং আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি আসামে ফিরবেন না।