সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত

সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মঙ্গলবার ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ প্রস্তাব ভোটে দিলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। গত ১৮ জানুয়ারি বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিন রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দেন। গত ১৯ জানুয়ারি চীফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য উপাধ্যক্ষ মো.আবদুস শহীদ এ প্রস্তাব সমর্থন করেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বৈঠকের শুরুতে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও উত্তর টেবিলে উপস্থাপন ও ৭১ বিধিতে নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা শুরু হয়। আলোচনার শেষ দিনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনায় অংশ নেন এবং সমাপনি ভাষণ দেন।

এছাড়া এদিন আলোচনায় অংশ নেন, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সরকারি দলের আমির হোসেন আমু, মনিরুল ইসলাম, আসলাম হোসেন সওদাগর ও মনোরঞ্জনশীল গোপাল।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান বৈশ্বিক মহামারি সফলভাবে মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতি সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। করোনার ছোবলে যখন বিশ্ব অর্থনীতি থমকে দাঁড়িয়েছে, সর্বত্র অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তখন শেখ হাসিনা তা মোকাবেলা করতে ৩১ দফা নির্দেশনা দেন। দিনরাত ভার্চ্যুয়ালি সর্বস্তরে যোগাযোগ করে দেশকে এবং মানুষের জীবন-মান স্বাভাবিক রাখতে কাজ করেছেন। ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়ে পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন। যার ফলে বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলায় সফল দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। আমেরিকার বার্তা সংস্থার জরিপে করোনা মোকাবেলায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে এবং বিশ্বে ২০তম অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, দেশে করোনার প্রকোপ কমে আসার পর আবার অর্থনীতি সচল করতেও সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় আজ দেশ আবার স্বাভাবিক কর্মকান্ডে আসা শুরু করেছে। মানুষের জীবন মানও স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে। করোনাকালে দেশে কোথাও কোন সংকট হতে দেয়নি শেখ হাসিনার সরকার। বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তাসহ বিভিন্ন ভাতা, আর্থিক ও খাদ্যে প্রনোদনা প্রদানের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানিষের জীবন স্বাভাবিক রেখেছে। আর যেখানে বিশ্বের প্রায় সব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক, সেখানে বাংলাদেশ এই বিশ্ব সংকটের মধ্যেও প্রবৃদ্ধি ৫.২৫ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এ অর্জন বিশ্বে তৃতীয় ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব দেশ বঙ্গবন্ধুর সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছে। ’৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ।

আমির হোসেন আমু সরকারের সময়ে পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ চলমান বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলোর কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হবে। দেশের মানুষের জীবন-মানের আরো উন্নতি হবে। তিনি গত এক যুগে কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা, অবকাঠামো, যোগাযোগ, বিদ্যুৎসহ সবক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যও তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত আমলের দুঃশাসন, দুর্নীতি, অব্যবস্থা, অন্যায়, অত্যাচারের চিত্র তুলে ধরেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার সফল মোকাবেলার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে আবার গতি ফিরে আসছে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ধনী দেশে রূপান্তর করতে ইতোপূর্বে নেয়া বহুমাত্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই এ সব শেষ হবে।

সূত্র : বাসস