প্রথম দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৪৫

প্রথম দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৪৫

হাফ সেঞ্চুরি করার পর সাদমান ইসলাম। পরে তার ইনিংস থামে ৫৯ রানে। ছবি: ক্রিকবাজ

চট্টগাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৪২ রান।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা ভালোই করেন দুই ওপেনার তামিম ও সাদমান। রান আসে ওয়ানডে স্টাইলে। আর সেটাই হয়তো কাল হয়ে দাঁড়ায়। পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন তামিম ইকবাল।

রাউন্ড দা উইকেটে করা রোচের ডেলিভারি স্কিড করে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকে একটু। তামিম পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন বটে, তবে ব্যাট-প্যাডে ফাঁক রেখে দেন অনেকটা। ব্যাটে হালকা ছুঁয়ে বল উড়িয়ে দেয় বেলস। ব্যক্তিগত ৯ রানে বিদায় ওয়ানডে অধিনায়ক। আর এতেই মুশফিকুর রহিমকে ছাড়িয়ে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড আবার নিজের করে নেন তামিম (৪ হাজার ৪১৪)। কিন্তু পরে মুশফিক রেকর্ডটি আবার নিজের করে নেন ২৬ রানের ইনিংস খেলে।

দ্বিতীয় উইকেট জুটি প্রায় জমে যাচ্ছিল সাদমান ও নাজমুল হোসেন শান্তর। কিন্তু হঠাতই ছন্দপতন। দলীয় ৬৬ রানে দুর্ভাগ্যজনক রান আউট নাজমুল হোসেন শান্ত। এক রানের জায়গায় দুই রান নিতে গিয়ে শান্তকে বোকা বানান সাদমান। ফাইন লেগ থেকে বল আসতে আসতে ক্রিজের মাঝখানে শান্ত, আলতো করে বেলস ফেলে দেন সিলভা। ৫৮ বলে তিন চারে ২৫ রান করে ফেরেন শান্ত।

অধিনায়ক মুমিনুলের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে ওঠে এরপর সাদমানের। এই জুটিতে আসে ৫৩ রান, ১৬৭ বলে। ভালোই খেলছিলেন মুমিনুল। কিন্তু দলীয় ১১৯ রানের মাথায় ওয়ারিক্যানের বলে ক্যাচ নেন ক্যাম্বেল। ৯৭ বলে ২টি চারে ২৬ রান করে ফেরেন টেস্ট অধিনায়ক। ব্যক্তিগত ১ ও ২ রানে নতুন জীবন পেয়েছিলেন তিনি।

এর মধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পেয়ে যান সাদমান। ১২৮ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। ইনিংসটা আরও বড় হতে পারত। কিন্তু হয়নি। ব্যক্তিগত ৫৯ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি ওয়ারিক্যানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। এই আউট নিয়ে সংশয় ছিল। রিভিউ নিলেই বেচে যেতে পারতেন সাদমান। কিন্তু অপর প্রান্তে মুশফিকুর রহীম হয়তো সায় দেননি। ফলে নেয়া হয়নি রিভিউ। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে দিয়ে। কোভিড পরিস্থিতিতে এখন প্রতি দলের জন্য আছে ৩টি করে সফল রিভিউ। তার পরও রিভিউ না নেওয়ার কারণ বোঝা ভার। ১৫৪ বলে ৬টি চারে সাদমানের রান ৫৯।

দিনের সবচেয়ে বড় জুটি সাকিব আর মুশফিকে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ৫৯ রান। দলীয় স্কোর তখন ১৯৩। ক্যারিবীয় সব স্পিনাররকে ভালোমতোই সামলাচ্ছিলেন মুশফিক। কিন্তু হঠাত ওয়ারিক্যানের একটি বল খুব নিচু হয়ে চলে যায় প্রথম স্লিপে। এত নিচু হয়ে যাওয়া ক্যাচও খুব কষ্টে তালুবন্দী করেন ১৪০ কেজির বিশাল দেহী কর্ণওয়াল। দিন শেষে কর্নওয়ালের এটিই সাফল্য। কারণ বল হাতে বেচারা পাননি উইকেটের দেখা।

৬৯ বলে ৩৮ রানে ফেরেন মুশফিকুর রহীম। তার ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার। দিনের বাকি সময়টা অবশ্য দারুণ খেলেছেন সাকিব। সঙ্গে থাকা লিটনও ছিল দুরন্ত। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রান ৪৯, ৯৫ বলে। ৯২ বলে চারটি চারে ৩৯ রানে অপরাজিত আছেন সাকিব। সেখানে লিটন ছিলেন আরও মারমুখি। ৫৮ বলে ছয়টি চারে ৩৪ রানে অপরাজিত তিনি।

বল হাতে ক্যারিবীয়দের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যান। বাকি এক উইকেট কেমার রোচের। যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই দীর্ঘদেহীর কর্ণওয়াল পাননি উইকেটের দেখা। যদিও তিনি বল করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ ওভার। এক মেডেনে রান দিয়েছেন ৫৬।