এলাকার সুবিধা অনুযায়ী রাজস্ব ও ইউটিলিটি মূল্য নির্ধারিত হওয়া উচিত : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

এলাকার সুবিধা অনুযায়ী রাজস্ব ও ইউটিলিটি মূল্য নির্ধারিত হওয়া উচিত : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম - ফাইল ছবি

রাজধানীতে এলাকা বা জোনভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ, ভবনের উচ্চতা, রাজস্ব এবং পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘উচ্চবিত্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষ এবং কম আয়ের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কেন একই মূল্য পরিশোধ করবে। সব জায়গায় সমান মূল্য নির্ধারিত হওয়ায় এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। এজন্য উচ্চবিত্ত এলাকার মানুষের রাজস্বের হার এবং ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য বর্ধিত হওয়া উচিত। একই ধরনের রাজস্ব এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ যৌক্তিক নয়।’

শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা ওয়াসার ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার’ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বাড়ানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, সব প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রকল্পের ব্যয় না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। প্রকল্পে অযথা কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে টাইমলাইন ঠিক করে দেয়া হচ্ছে এবং সে টাইমলাইন অনুযায়ী শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

স্থায়ী ও মানসম্মত কাজ করতে গিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পাঁচ-ছয় বছর আগে নেয়া প্রকল্প এখন শুরু করতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়। কারণ ওই সময়ের দাম এবং বর্তমান দামের মধ্যে পার্থক্য থাকে। কম খরচে কাজ করে পুরো টাকা নষ্ট করার চেয়ে কিছু টাকা বেশি খরচ করে স্থায়ী কাজ করা উত্তম।’

কোভিডকালীন সময়েও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

ঢাকা নগরীতে পানি সরবরাহ করতে ওয়াসার এই প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘পানির ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে সারা দেশে স্থায়ী উন্নয়নের পাশাপাশি স্থায়ী পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় যে পানির সমস্যা ছিল তা এখন সমাধান হয়েছে।’

দেশে পানির কোনো সমস্যা থাকবেনা বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, পানির স্তর নিচে নামার কারণে সারা পৃথিবীর ন্যায় বাংলাদেশও সার্ফেস ওয়াটারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। গন্ধবপুর পানি শোধনাগার থেকে রাজধানীতে পানি নিতে প্রকল্প এবং ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের কাজ একই সাথে চলছে। কাজ শেষ হলেই পানি সরবরাহ শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

এলজিইডির রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এলজিইডি যেসব কাজ করে তা লো কস্টে করে। যার জন্য স্থায়ী হয় না। তার মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল প্রতিষ্ঠানের কাজ মানসম্মত এবং স্থায়ী করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দুর্নীতি বা অনিয়ম করে নিম্নমানের কাজ করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নিম্নমানের কাজের সাথে জড়িত থাকায় ইতোমধ্যে অনেক প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ভালো কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ আসবে। তবে সেই চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে।’

এ সময় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : ইউএনবি