মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গুলি, নিহত ৬

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গুলি, নিহত ৬

ছবি : আলজাজিরা

মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরো অনেকে। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে এ খবর দিয়েছে আলজাজিরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার দেশটির দ্বিতীয় বড় শহর মান্দালয়ে দুজন নিহত হয়েছেন এবং বাকি চারজন নিহত হয়েছেন মোনিওয়ায়।একজন চিকিৎসক বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, মান্দালয়ে একজনকে বুকে এবং অপর একজন নারী বিক্ষোভকারীকে তার মাথায় গুলি করা হয়।

এদিকে ফ্রন্টিয়ার ম্যাগাজিন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, মান্দালয়ে হাজারো মানুষের সমাবেশে পুলিশ প্রথমে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে। পরে বিক্ষোভকারীরা আবারো জমায়েত হলে এবং তাদের অবস্থান ধর্মঘট শুরু করলে তখন সরাসরি গুলি করা হয়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে সেখানে গোলযোগ চলে আসছে। অভ্যুত্থানের পর দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চিসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত নভেম্বরের নির্বাচনে সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) আবারো ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দেশটির সেনাবাহিনী সে নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়নি। এবং এটিকে ‘প্রতারণা’ হিসেবে অভিহিত করে নির্বাচিত সরকাকে উৎখাত করে দেয়। সেনাবাহিনীর এ ক্ষমতাগ্রহণের প্রতিবাদে এবং গণতান্ত্রিক শাসন ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা জানানো হয় অভ্যুত্থানের।

মোনিওয়ার একজন উদ্ধারকর্মী এএফপিকে জানিয়েছেন, তার দল চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে এবং পরিবারগুলোর সাথে যোগাযোগ করেছে।এদিকে মোনিওয়া গ্যাজেট নামক স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মোনিওয়া সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা পাঁচজন।

এদিকে, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনেও সরাসরি গুলিতে অনেক আহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ৩০০ জনের মতো বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। মিয়ানমার নাও ওয়েবসাইট এ তথ্য দিয়েছে।এছাড়া মাইঙ্গান ও মাগওয়ে শহরেও বিক্ষোভ চলছে।তবে এসব বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী প্রায় এক মাসের চলমান বিক্ষোভে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী দেশটিতে ১ হাজার ২৩০ জনকে আটক করেছে।

মিয়ানমারভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) সোমবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায় বলে খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।