মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৬ জন নিহত

মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৬ জন নিহত

মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৬ জন নিহত

মিয়ানমারে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালনের মধ্যেই সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে দেশটিতে। শনিবার বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সারাদেশে অন্তত ১৬ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

এর আগে বার্ষিক সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আগে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের সরাসরি গুলির হুমকি দেয় সামরিক জান্তা। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এমআরটিভিতে প্রচারিত ওই বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলা হয়, 'বিগত দিনের কুৎসিত মৃত্যু থেকে আপনাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। আপনারা মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।'

শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, মান্দালায়সহ বিভিন্ন শহরে সামরিক শাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

সামরিক জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাসা এক অনলাইন বার্তায় বলেন, 'আজকের দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক। তিন শ'র বেশি নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন জেনারেলরা।'

ইয়াঙ্গুনের ডালা শহরতলীতে পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে নিরাপত্তা বাহিনী। গুলিতে অন্তত চারজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।

অপরদিকে ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন অঞ্চলে গুলিতে তিনজন নিহত হন। তাদের মধ্যে স্থানীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলে খেলা এক তরুণও রয়েছেন। আর পূর্বের লাশিহো শহরে চারজন এবং ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগোতে আরো চারজন নিহত হন। অপরদিকে উত্তরপূর্বের হোপিন শহরে নিহত হয়েছেন এক বিক্ষোভকারী।

এ দিকে থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের অবস্থা পর্যবেক্ষণকারী অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৩২৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া তিন হাজারের বেশি লোককে বিক্ষোভের সংশ্লিষ্টতায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।

সূত্র : রয়টার্স