রোহিঙ্গাদের সাথে খোলামেলা মতবিনিময় করেছেন ১০ রাষ্ট্রদূত

রোহিঙ্গাদের সাথে খোলামেলা মতবিনিময় করেছেন ১০ রাষ্ট্রদূত

রোহিঙ্গাদের সাথে খোলামেলা মতবিনিময় করেছেন ১০ রাষ্ট্রদূত - ছবি - সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত দশ জন কূটনীতিক মিয়ানমার নিপীড়িত নাগরিকদের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণের লক্ষে ভাসানচর পরিদর্শনে গিয়ে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের সাথে খোলামেলাভাবে মতবিনিময় করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার তুরস্ক, ইইউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নেদারল্যান্ডের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতদের জন্য্য দিনব্যাপী এ সফরের আয়োাজন করে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর বিষয়ে জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততার অংশ হিসেবে এই সফর অনুষ্ঠিত হয়।

এই সফরের উদ্দেশ্য হলো রাষ্ট্রদূতদের ভাসানচরে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যাপক উন্নয়ন ও মানবিক প্রকল্প প্রত্যক্ষ করার সুযোগ প্রদান।

সফরকালে কূটনীতিক দলটি দ্বীপে বাঁধ, ভবন, আবাসন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো পরিদর্শনের সুযোগ পান।
দলটি সেলাই, হস্তশিল্পসহ বেশ কয়েকটি সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে এসব দক্ষতা কাজে লাগাতে সক্ষম হবে।

রাষ্ট্রদূতরা খোলামেলাভাবে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাদের চিন্তা ও ভাবনা নিয়ে খোলামেলাভাবে আলোচনা করেন।
মতবিনিময়কালে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ সরকারের অনুকরণীয় মানবিকতা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে প্রদত্ত সহায়তার জন্য জন্যপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানান।

একই সাথে তারা মিয়ানমারে তাদের নিজভূমিতে ফিরে যাওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

একজন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি জানান, ‘আমি চাই আমার ছেলেমেয়েরা তাদের নিজ দেশে নিজস্ব জাতীয় পরিচয় নিয়ে কেড়ে উঠুক।’
রোহিঙ্গারা ভাসানচরে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তারা দ্বীপটিকে কক্সবাজারের ক্যাম্পের তুলনায় নিরাপদ, সুরক্ষিত, অপরাধমুক্ত বলে বিবেচনা করেন।

কিছু রোহিঙ্গা তাদের বাচ্চাদের জন্য শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং তাদের চাষাবাদ ও মাছ ধরার সুযোগ দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এটি তাদের কর্মঠ রাখতে সাহায্য করবে।

রাষ্ট্রদূতরা একটি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রে রোহিঙ্গা শিশুদের সাথে কিছু সময় কাটান। এটি বাংলাদেশে বিদেশী মিশনের প্রধানদের প্রথম ভাসানচর সফর।

এরআগে জাতিসঙ্ঘের একটি দল ২০২১ সালের ১৭-২০ মার্চ ভাসানচর সফর করে। এছাড়া ওআইসির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের নেতৃত্বে একটি দলও দ্বীপটি সফর করে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসিন, পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম এবং সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তারা এই দলের সাথে ছিলেন।

প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকারের সামগ্রিক প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু হয়।

এপর্যন্ত ১৮ হাজার ৩৩৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপে সরকারের এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

সূত্র : বাসস