আমরা ‘ল’লেস স্যোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি : শাহদীন মালিক

আমরা ‘ল’লেস স্যোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি : শাহদীন মালিক

ফাইল ছবি

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক ব‌লে‌ছেন, যেভা‌বে চল‌ছে এভা‌বে চল‌তে থাক‌লে সমাজ খা‌দে প‌রে যা‌বে, এম‌নিতেই খা‌দের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। তি‌নি ব‌লেন, উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে আমরা টোটাললি ‘ল’লেস স্যোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যেখানে কোনো আইন নেই, আমাদের নিরাপত্তাবোধ থাকবে না, অন্যায়-অপরাধ হলে আইন অনুযায়ী কোনো বিচার হবে না। আমরা কিন্তু প্রত্যেক দিন সেদিকে এগোচ্ছি। শনিবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হো‌সেন চৌধুরী হ‌লে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত জোরপূর্বক গুম বিষয়ে বাংলাদেশের বাস্তবতা ও জাতিসংঘের সুপারিশ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 
শাহদীন মালিক বলেন, যেসব দেশে ৮০’র দশকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুম শুরু হয়েছিল সেসব দেশগুলোতে কী হয়েছিলে সেগুলো তারা দেখেন না কেন? ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকা থেকে জনগণ আমেরিকায় চলে আসা। হন্ডুরাস, গুয়েতেমালা, নিকারাগুয়ে এসব দেশ থেকে হাজার হাজার, লাখ লাখ লোক আমেরিকায় আসতে চাইছে, আর ট্রাম্প তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করছে। ৮০’র দশকে এসব দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুধু হয়েছিল এরই ফল হচ্ছে এগুলো।
তিনি বলেন, এ লোকগুলো আমেরিকাতে আসছে কেন? তাদের সবারই এক কথা অনেকটা আমাদের রোহিঙ্গাদের মতো। তাদের দেশে তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই, তারা সম্পূর্ণ অসহায়, সাংঘাতিক ধরনের অপরাধ হচ্ছে, তারপরও সরকার তাদের কোনো সাহায্য করে না। জানে বাঁচতে তারা আমেরিকায় যাচ্ছে। এ সমস্যাটা ৭০’র দশকে চিলিতে দেখা দিয়েছিল। কোনো দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুম শুরু হয় এর পরিণতি যে কি হয়, তার বড় উদাহরণ হচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশগুলো।

তিনি বলেন, ক্যাসিনো ব্যবসা পুলিশের নাকের ডগায় হচ্ছে, অথচ পুলিশ বলছে তারা জানে না! চারদিকে দুর্নীতি হচ্ছে। এসব পচন শুরু হয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম দিয়ে। এক্ষেত্রে বড় উদ্বেগ হচ্ছে এর আগে যেসব দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম তাদের থেকে আমরাও আমাদের ভবিষ্যতে চিত্র দেখতে পাই। সে সমাজ আমাদের কারো কাম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে আমরা টোটালি ল’লেস স্যোসাইটির দিকে এগোচ্ছি। যেখানে কোনো আইন নেই, আমাদের নিরাপত্তাবোধ থাকবে না, অন্যায়-অপরাধ হলে যেখানে আইন অনুযায়ী কোনো বিচার হবে না। আমরা কিন্তু প্রত্যেক দিন সে দিকে এগোচ্ছি। প্রতিফলন কি সেটা যারা সরকার চালাচ্ছে তারা দেখে কি-না জানি না, তবে আমি তো দেখি।

 নারী পক্ষের আহ্বায়ক শিরিন হকের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ।