উইঘুর নারীদের বন্ধ্যা বানাচ্ছে চীন !

উইঘুর নারীদের বন্ধ্যা বানাচ্ছে চীন !

ছবি: সংগৃহিত

চীনের বন্দিশিবিরে উইঘুর মুসলিম নারীদের ইনজেকশনের মাধ্যমে জোরপূর্বক বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে। আটককেন্দ্রগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া নারীদের বরাতে করা প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম 'দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট'।
গুলবাহার জলিলভা নামে এক নারী, যাকে গত এক বছরের বেশি সময় যাবত চীনের সেই বন্দিশিবিরে আটক অবস্থায় রাখা হয়েছিল। তার ভাষায়, ‘আটককেন্দ্রের লোকজন আমাদের বিভিন্ন সময়ে ইনজেকশন দিত। আর এর মাধ্যমে তারা আমাদের বন্ধ্যা বানিয়ে দিয়েছে।’
৫৪ বছর বয়সী এই নারী আরও বলেন, ‘আটককেন্দ্রে কর্মরত লোকজন সেখানকার দরজার ছোট একটু জায়গা দিয়ে আমাদের হাত আটকিয়েছে। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমরা দ্রæতই অনুধাবন করতে পারি; যে আমাদের আর কখনো পিরিয়ড হবে না।’
ফরাসি গণমাধ্যম ‘ফ্রান্স-২৪’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ছোট একটি সেলে ৫০ জনের বেশি নারীর সঙ্গে আমাকে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাতে হতো। তাদের নির্যাতনে আমাদের তখন মনে হতো আমরা কেবল এক টুকরো মাংস মাত্র; আর কিছুই নয়।’
এ দিকে ৩০ বছর বয়সী মেহরিগুল তুরসুন; তাকেও প্রায় এক বছরের বেশি সময় যাবত চীনের সেই বন্দিশিবিরে থাকতে হয়েছে। সদ্য মুক্তি পাওয়া এই নারী বলেন, ‘মুক্তি পাওয়ার পর থেকে আমি যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছি। আটককেন্দ্রে থাকার সময় আমাদের অজ্ঞাত ড্রাগ ও ইনজেকশন দেওয়া হতো।’
মেহরিগুল তুরসুন আরও বলেন, ‘তখন প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় যাবত ক্লান্ত বোধ করেছিলাম, স্মৃতিশক্তি হারিয়েছিলাম এবং হতাশাগ্রস্ত বোধ করেছিলাম। আমার মনে হয়, সে সময়ই তারা আমাকে বন্ধ্যা বানিয়ে দিয়েছে। যদিও এর প্রায় ৪ মাস পর আমি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে ধরা পড়ায় তারা আমাকে মুক্তি দিয়ে দেয়।’
তিনি জানান, এরপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে এলে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তাকে কোনো এক সময় বন্ধ্যা করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ২০ লাখেরও বেশি লোককে এক সঙ্গে টর্চার সেল খ্যাত বন্দিশিবিরে আটকে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। যার অংশ হিসেবে গত কয়েক বছর যাবত দেশটি মুসলিমদের ওপর নানা অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মিডিয়া ও পশ্চিমা বেশিরভাগ দেশ।
অপর দিকে গত বছর জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলেছিল, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উইঘুরের নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০ লাখের বেশি লোককে চীন আটক করে রেখেছে। কর্তৃপক্ষ এসব লোকদের ওপর বিভিন্ন সময় নানা অমানবিক নির্যাতন করে থাকেন; যা এখনো অব্যাহত আছে।