মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় এনএসআইয়ের সাবেক ডিজির বিচার শুরু

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় এনএসআইয়ের সাবেক ডিজির বিচার শুরু

ছবিঃ সংগৃহিত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের (৬৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৪ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওই দিন মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন (ওপেনিং স্টেটম্যান্ট) করার জন্য ঠিক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। বুধবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

বুধবার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, মোখলেসুর রহমান বাদল, রেজিয়া সুলতানা চমন ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আর আসামী ওয়াহিদুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও সৈয়দ মিজানুর রহমান।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর একই দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আসামি ওয়াহিদুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

এর আগে আসামীর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর তদন্ত সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে তদন্তে তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ পাওয়া যায়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: মতিউর রহমান। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়। এ মামলায় মোট ৫৪জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বিকেল আনুমানিক ৪টা ৩০মিনিটে অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজ্যুটেন্টের দায়িত্বে থেকে ৪টি সামরিক জীপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলিবর্ষণ করে এবং রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় ৫শ থেকে ৬শ স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীদের হত্যা, গণহত্যা ও অসংখ্য মানুষকে গুরুতর আহত করে। গুলিবর্ষণ করে সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হত্যা, গণহত্যার শিকার মানুষের লাশ পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে কয়েকটি গর্তে মাটি চাপা দেয়।