ঢাকা মহানগর আ. লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আজ

ঢাকা মহানগর আ. লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আজ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আজ। শনিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠেয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শীর্ষ পদে আসতে পারে পরিবর্তন। এমন আভাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

দলটির নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, নানা কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ততা, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, অনুপ্রবেশকারী, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে স্থান দেওয়া, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেওয়াসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগরের দুটি কমিটির নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা ঘোষণা করা হবে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে। এ অবস্থায় পদপ্রত্যাশী অনেক নেতাই গণভবনে গিয়ে দলীয় হাইকমান্ডের দোয়া ও আশীর্বাদ নেওয়ার খবরও এসেছে।

দুই মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত বৃহস্পতিবার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। এবারও মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তর-দক্ষিণ দুটোতেই। শনিবার কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে।

আওয়ামী লীগ নিশ্চিত করেছে, আজ বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তবে বিকেলে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর রমনার বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন। সেখানেই দুই মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী নেতাদের একটি তালিকা তৈরি করে নিজের কাছে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন কমিটিতে নেতৃত্ব দানকারীদেরও একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছেন তিনি। কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একটি চ্যালেঞ্জিং কমিটি উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা যায়, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানের নামও শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির নাম আলোচনার শীর্ষে। এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এমএ কাদের খান, সদস্য বিএম সিরাজুল ইসলামের নাম আলোচনায় আছে।

এ দিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, অভিন্ন ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নুরুল আমিন রুহুলের নাম শোনা যাচ্ছে। আবার বহালও থাকতে পারেন বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাত।

সাধারণ সম্পাদক পদে অভিন্ন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের ছেলে এবং ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আবদুল আজিজ (তামিম) আলোচনায় আছেন।

এ ছাড়াও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি আওলাদ হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামাল এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেনের নামও শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র বলছে- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী পরিবর্তন হলে সে ক্ষেত্রে সাঈদ খোকনও হতে পারেন সাধারণ সম্পাদক।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। এর তিন বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপরই ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।