দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম: উপকারী না ক্ষতিকর?

দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম: উপকারী না ক্ষতিকর?

ছবি: সংগৃহীত

দুপুরে খাওয়ার পরে বিছানায় একটু গড়াগড়ি করে নেয়া। হঠাৎ পাওয়া বিশ্রামে সুযোগ পেলে খানিকক্ষণ ঘুম। কর্মজীবীরা কেউ কেউ অফিসের চেয়ারেই গা এলিয়ে দু-পাঁচ মিনিট ঘুমিয়ে নেন। ভালোবেসে আমরা যাকে ভাতঘুম নামে ডাকি। এই ভাতঘুম নিয়ে অনেকের আছে আপত্তি। মনে করা হয়, এটি অসময়ের ঘুম। এতে স্থুলতা বাড়তে পারে। আসলেই কি তাই? দুপুরের ঘুম সত্যিই ক্ষতি করে নাকি উপকারী তা জানার আগে জেনে নিন এর কারণ।

কেন ঘুম পায়
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেলে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা ওঠানামা করে। যেকোনো খাবার খাওয়ার পরই রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনার প্যানক্রিয়াস ইনসুলিন তৈরি করতে থাকে। বেশি খেলে প্যানক্রিয়াস বেশি ইনসুলিন উৎপন্ন করে। ইনসুলিন বেশি উৎপন্ন হলে দুটো বিষয় ঘটে। এই হরমোন আপনার মস্তিষ্কে গিয়ে বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনে পরিণত হয়। এই মেলাটোনিন হলো ঘুমের হরমোন।

খুব ভারী খাবার খেলে তা হজম করতে শরীরের ৬০-৭৫ ভাগ শক্তি ব্যবহৃত হয়। এ শক্তি ক্ষয়ের জন্য আমাদের ঘুম পায়। কেবল উচ্চ কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবারের বেলায় এটি ঘটে না, প্রোটিন জাতীয় খাবারের বেলায়ও এটি ঘটে।

দুপুরের ঘুমের ফলে কী হয়
দুপুরের ঘুমের ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। রাতের ঘুমের থেকে দুপুরের ঘুম হয় অনেক শান্তিতে। অর্থাৎ দুপুরে আপনি তখনই ঘুমাতে পারেন, যখন আপনার হাতে কিছুটা সময় থাকে। তাই সেই ঘুমও হয় অনেকটা নিশ্চিন্তে। এ ঘুম থেকে ওঠার তাড়া থাকে না খুব একটা,তাই অ্যালার্মও দিতে হয় না। এসব কারণেই দুপুরের ঘুমে ব্লাড প্রেশারের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে।

দুপুরের ঘুম বাড়ায় আপনার মনে রাখার ক্ষমতা। যারা দুপুরে অন্তত আধঘণ্টা ঘুমান, তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের থেকে বেশি ক্ষুরধার হয়, এমনই উঠে এসেছে বেশকিছু গবেষণায়।

সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে ভাতঘুম। ঠিকভাবে যদি দুপুরে ঘুমাতে পারেন তাহলে আপনার সৃজনশীলতা বাড়তে বাধ্য। দুপুরে ঘুমে মস্তিষ্কের বিশ্রাম হয় খুব ভালো, ফলে চিন্তা শক্তিও বৃদ্ধি পায়।যদি মাথা গরম থাকে কোনো কারণে বা মন খারাপ থাকে, তাহলে দুপুরের ঘুম দরকার। গবেষণা বলছে, এ সময় ঘুমে স্নায়ুর ওপর চাপ কমে। মন ভালো হয়।

অনেক সময়ই রাতের ঘুম পরিপূর্ণ হয় না। তার জন্য বিশেষভাবে দুপুরের ঘুম প্রয়োজন। এতে ক্লান্তি কেটে যায়। কোনো সুক্ষ্ণ কাজ করতে সেই পরিমাণ সতর্ক থাকতে হয়, তাও বৃদ্ধি পায় দুপুরের ঘুমে। তাই প্রয়োজন মতো যখনই সময় পাবেন নিশ্চিন্তে ঘুমান দুপুরবেলায়।