আপিলেও কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল

আপিলেও কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল

ছবি:সংগৃহীত

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে  সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম  কোর্টের আপিল বিভাগ। তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪ অভিযোগের সাতটিতে মৃত্যুদণ্ড, পাঁচটিতে যাবজ্জীবন, একটিতে ১০ বছর ও আরেকটি পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগ সাতটির মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন, বাকি চারটিতে যাবজ্জীবন দিয়েছেন।

আজ  প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।

আদালতে  রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তাদের সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা ও মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অপরদিকে কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আইনজীবী এস এম মো. শাহজাহান।তাদের সহযোগিতা করেন এডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির ও ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি নবম মামলা। আজ রায়ের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো। এর আগে গত ৩রা ডিসেম্বর কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিলের ওপর রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৪ই জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে গত ২৫শে নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে শেষ হয় ৩রা ডিসেম্বর। তারও আগে গত ৩০শে অক্টোবর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা কায়সারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন।

নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ। পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। তবে রিভিউ যে আপিলের সমকক্ষ হবে না, তা যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ‘রিভিউ’ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়েই স্পষ্ট করা হয়েছে।

রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।