বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়ন হলে জিডিপিতে মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত বাংলাদেশ : আবুল বারকাত

বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়ন হলে জিডিপিতে মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত বাংলাদেশ : আবুল বারকাত

অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত। ছবি : ইবি সংবাদাতা

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত বলেছেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন বাস্তবায়ন হলে ২০০০ সালের মধ্যেই জিডিপিতে মালেশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত বাংলাদেশ। স্বাধীনতা ও পরবর্তী পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনার পর অর্থ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনবলে মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর উন্নয়নের এ গতি থেমে যায়।’ শনিবার কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্বদ্যিালয়ে (ইবি) অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এসময় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির শক্তিশালী ২০ অর্থনীতির দেশের একটি হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন  প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ।

অধ্যাপক বারকাত বলেন, ‘১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর দর্শনের প্রারম্ভিক বাস্তব প্রয়োগ করা হয়েছিল। যার ফলাফল ছিল ধনাত্মক। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তার দর্শন বাস্তবায়নের অনুকূল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দর্শন পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন হলে ২০০০ সাল নাগাদ স্বাধীন বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত শ্রেণি বৈষম্যহীন, শক্তিশালী অর্থনীতীসমৃদ্ধ ও আলোকিত মানুষের সমাজ ব্যবস্থায় পরিণত হতো।’

শনিবার সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইবির অর্থনীতি বিভাগ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আয়োজনে আঞ্চলিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত।

সেমিনারে প্রবীণ এই অর্থনীতীবিদ আরোও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনের মৌল ভিত্তি চেতনা হলো জনগণের অন্তর্নিহিত অপার শক্তি ও অসীম ক্ষমতার উপর পূর্ণ আস্তা ও বিশ্বাস। এ দর্শন বৈষম্যহীন অর্থনীতি ও অসাম্প্রদায়িক আলোকিত মানুষের সমৃদ্ধ সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে সহায়ক।’

তিনি আরোও বলেন, ‘আমার মতে বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহ্রাসকারী দর্শন সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় তবে আংশিক বাস্তবায়ন সম্ভব। এক্ষেত্রে আমি বড় মাপের তিনটি ক্ষেত্র দেখি যেখানে এই সম্ভাবনা প্রয়োগ করা যেতে পারে। এগুলো হলো প্রথমত রাষ্ট্রীয় আয়োজনে সারা দেশে উচ্চতর গুণগত মানসম্মত বিজ্ঞানসম্মত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষারর প্রসার। যেখানে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা সর্বোচ্চ হবে। যেন মেধাবীরা স্কুল শিÿকতায় আকৃষ্ট হয়। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্রীয় আয়োজনে দেশের সকল মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বহুমুখী-গণমুখী কৃষি সমবায় গড়ে তোলা।’

আঞ্চলিক এ সেমিনারের উদ্বোধন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা। সেমিনারটির সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মুঈদ। সেমিনারে অর্থনীতি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এ অ লের মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।