গরমে থাকুন সতর্ক

গরমে থাকুন সতর্ক

গরমে হিটস্ট্রোকের শঙ্কা থাকে

গরমে হিট স্ট্রেকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়৷ তবে সঠিক লাইফস্টাইলে আপনি থাকতে পারেন সুস্থ আর তরতাজা৷ 

ক্যালেন্ডার বলছে সময়টা মে মাসের প্রথম সপ্তাহটা পেরিয়ে গেল৷ সুতরাং তাপমাত্রার পারদ তো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বেই৷ বিশেষ করে দিনের বেলা৷ এই চড়া রোদে বেরোলে যে ব্যাপারটির আশঙ্কা আমরা করে থাকি তা হলো হিট স্ট্রোক৷ প্রতি বছরই খবরের কাগজ খুললেই আমরা হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর খবর পাই৷

তাই হিট স্ট্রোক নিয়ে আমাদের আগে থেকেই সচেতন থাকতে হবে৷ সেই জন্যইহিট স্ট্রোক ও তার লক্ষণগুলি সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক জ্ঞান থাকাটা খুব জরুরি৷ মূলত অতিরিক্ত গরমে শরীর যখন জলশূন্য হয়ে পড়ে, যাকে আমরা ডিহাইড্রেশন বলে থাকি, তখনই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে৷ ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় রাখার সিস্টেমটাই পুরোপুরি ভেঙে পড়ে৷ ফলে তার থেকে ব্রেইন, বা কিডনির মতো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে৷

শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কোষ অর্থাত্‍ সেল ড্যামেজের সম্ভাবনাও থেকে যায়৷ নার্ভের সমস্যাও দেখা দিতে পারে৷ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে৷ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির বডি টেম্পারেচার যদি ১০৪ বা তার বেশি থাকে তখন বুঝতে হবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিতে হবে৷ চড়া রোদের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে যদি দেখেন, আপনার বডি টেম্পারেচার হঠাত্‍ করে বেড়ে গেছে বা হূত্‍স্পন্দন খুব বেড়ে গেছে তত্‍ক্ষণাত্‍ সাবধান হোন৷

এছাড়াও ঝিমুনি, বমি পাওয়া, জিভ শুকিয়ে আসা, ত্বক খুব শুকনো ও লাল হয়ে যাওয়া, এইগুলিও কিন্ত্ত হিট স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ৷ সঙ্গে সঙ্গে কোনও ঠাণ্ডা জায়গায় বসুন৷ বেশি করে জল খান৷ প্রয়োজনে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন৷ বয়স্ক বা শিশুদের জন্য বাড়তি সাবধানতা নেওয়া উচিত্‍৷ এছাড়াও যাঁরা হার্টের সমস্যা, ব্লাড প্রেশার, অথবা ডিপ্রেশনের জন্য ওষুধ খান তাঁদেরও উচিত্‍ সাবধান হয়ে চলা৷

সুস্থ থাকবেন কী করে রোজকার লাইফ স্টাইলে কিছু সাধারণ রদবদল আনলেই গরমের সময় হিট স্ট্রোকের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়৷

গরম কাল তো প্রকৃতির নিয়মে আসবেই৷ আর আমাদেরও ঘরে গরমের ভয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবেনা৷তাই হিট স্ট্রোকের মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র হলো প্রচুর পানি খাওয়া৷ শরীর যাতে কোনও ভাবেই ডিহাইড্রেটেড না হয়ে যায় তার খেয়াল রাখা৷ বিশেষ করে হার্টের সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, বা অ্যান্টি ডিপ্রেশান্ট ওষুধ খান, তাঁদের চট করে ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়৷ তাই এই ব্যাপারে খেয়াল রাখুন৷ বাইরে বেরোলে সঙ্গে পানি নেবেন।  

ওআরএস বা নুন চিনির পানিও নিতে পারেন৷ হালকা সুতির জামা কাপড় পরে রাস্তায় বেরোন৷ এই সময় টেরিকটস, সিন্থেটিকের মতো পোশাক পরে অন্ততঃ দিনের বেলায় বেরোবেন না৷ তাতে গরমে ত্বক শ্বাস নিতে পারেনা৷ ফলে শারীরিক অস্বস্তি বেড়ে যায়৷ ছাতা, টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন৷ এগুলো ব্যবহার করলে অনেকটাই রোদের হাত থেকে রেহাই পাবেন৷ রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়, যতটা সম্ভব একটু ছায়া দেখে হাঁটার চেষ্টা করুন৷ খুব বদ্ধ এমন কোনও ঘরে এক নাগাড়ে বেশিক্ষণ না থাকাই ভালো৷

বিশেষ করে সেখানে যদি একসঙ্গে অনেক মানুষ থাকেন৷ তবে কাজের প্রয়োজনে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া সব সময় সম্ভব নয়৷ সেই ক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই খোলা জায়গায় এসে দাঁড়ান৷ আরাম বোধ হবে৷ খাওয়াদাওয়ার দিকেও কিন্ত্ত যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে৷ খুব তেল মশলা জাতীয় খাবার দিনের বেলার দিকে না খাওয়াই ভালো৷ লাইট ফুড হ্যাবিটের অভ্যাস করুন৷ তাতে শরীর সব সময়েই খুব ভালো থাকে৷ অনেকেই ভাবেন এই সময় আইস ক্রিম বা ঠাণ্ডা পানীয় খেলে শরীর হয়তো ঠাণ্ডা হবে৷ তাতে হিতে বিপরীত ঘটতে পারে৷

খেয়াল রাখুন

প্রচুর পানি খান৷ শরীরকে কোনও ভাবেই ডিহাইড্রেটেড হতে দেওয়া চলবে না

হালকা খাবার খান

সুতির জামা কাপড় পরুন

একটানা বদ্ধ ঘরে বেশিক্ষণ থাকবেন না

বয়স্ক ও বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি সতর্ক হোন