বিড়িতে বৈষম্যমূলক শুল্কনীতির প্রতিবাদে এনবিআরের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

বিড়িতে বৈষম্যমূলক শুল্কনীতির প্রতিবাদে এনবিআরের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ির উপর বৈষম্যমূলক শুল্কনীতির প্রতিবাদে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। রোববার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে নয়টায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। 

বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মো: হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য প্রদান করেন ফেডারেশনের সভাপতি এম কে বাঙ্গালী, কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মো: শামীম ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অর্ধসহ¯্রাধিক বিড়ি শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। 

ফেডারেশরেন সভাপতি এম কে বাঙ্গালী বলেন, ‘বিড়ি শিল্পের সাথে সমাজের অবহেলিত, অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর লক্ষ লক্ষ শ্রমিক জড়িত। অথচ এ শিল্পের উপর সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলকভাবে করারোপ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ির মোট রাজস্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে ২৪.২০ শতাংশ অপরদিকে নি¤œস্তর সিগারেটের রাজস্ব বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৫.৭১ শতাংশ। বিড়ির সম্পূরক শুল্ক যেখানে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে অন্যদিকে সিগারেটের সকল স্তরে কোন সম্পূরক শুল্কই বৃদ্ধি হয়নি। অর্থাৎ দেশীয় শিল্পকে ধ্বংস করে বিদেশী সিগারেট কোম্পানীকে সম্পূর্ণ আনুকূল্য দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, ‘বিগত অর্থমন্ত্রী বিড়ি শিল্প বন্ধের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন ২০৩০ সাল আর সিগারেট শিল্প বন্ধের সময় দিয়েছেন ২০৪০ সাল পর্যন্ত। দেশীয় শিল্প হিসেবে বিড়ি শিল্পের উপর এধরনের বৈষম্য অযৌক্তিক ও অমানবিক।’

কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি বলেন, ‘ধূমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। আমরা ধূমপান বিরোধী। কিন্তু সিগারেট টিকিয়ে রেখে বিড়ি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র কখনো হতে দেব না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি মানতে বাধ্য করব।’ 

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন,‘আমাদের প¦ার্শবর্তী দেশ ভারতে বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষনা দিয়ে সুরক্ষা দিচ্ছে। দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের দিকে বিবেচনা করে প্রতিবেশি দেশ ভারতে বিড়ির ওপর শুল্ক সহনীয় মাত্রায় রাখা হয়েছে। ভারতে এক হাজার বিড়িতে যেখানে শুল্ক দিতে হয় ১৪ টাকা সেখানে বাংলাদেশে ৩১৩ টাকা ৬০ পয়সা করা হয়েছে। যা বিড়ি শিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারা।’ জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত শ্রমিক বান্ধব প্রধানমন্ত্রী । আমাদের কর্ম রক্ষার স্বার্থে বিড়ির উপর শুল্ক কমাতে প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। 

মানববন্ধন শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। দাবিসমূহ হলো-১. বিড়ির দাম ১৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ টাকা করতে হবে। ২. “সম্পূরক শুল্ক” কমিয়ে ভারতের ন্যায় করতে হবে। ৩. কম দামি ও বেশি দামি সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে উচ্চস্তরের সিগারেটের মূল্য ও সম্পূরক শুল্ক অধিক হারে বৃদ্ধি করতে হবে । ৪. বিড়ির ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর বাতিল করতে হবে। ৫. বঙ্গবন্ধুর চালুকৃত  বিড়িকে অবিলম্বে “কুটির শিল্প” হিসেবে ঘোষনা করতে হবে। ৬. নি¤œস্তর ও  মধ্যম স্তরের সিগারেট একীভূত করে সমমূল্য করতে হবে।