কোয়ারেন্টিনে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যায়াম

কোয়ারেন্টিনে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যায়াম

মেহেরুন নেসা

দিন যত যাচ্ছে, করোণা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে । তাই করোনা সংক্রামক প্রতিরোধে হোম কোয়ারেন্টাইন বা ঘরে থাকা এখন সবার জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে । কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে ঘরে থাকা, শারীরিকভাবে কম সক্রিয়তা ও শুয়ে বসে থাকার ফলে স্বাস্থ্যেরউপর খারাপ প্রভাবও পড়ছে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সংবাদ, আতংকা, উদ্বিগ্নতা,দুশ্চিন্তা ইত্যাদির ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব পড়ছে। শারীরিকভাবে নিজেকে সক্রিয় রেখে ও বিভিন্ন অবসর বিনোদন কৌশলের মাধ্যমে  এই দুর্দিনে মনকে শান্ত রেখে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়।

মানসিকভাবে সুস্থ থাকার কৌশলঃ

পজিটিভ মনোভাব তৈরি করুন ও নিজেকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলতে শিখুন।

পরিবারকে পর্যাপ্ত সময় দিন । বাচ্চাদের সাথে খেলা করুন, সবাই মিলে গল্প করুন, বই পড়ুন,বারান্দায় বাগান করা,ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নইত্যাদি কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।

নিয়মিত প্রার্থনা করুন।

সব সময় শুয়ে-বসে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর একটু হাঁটাহাঁটি করুন। প্রয়োজনে  মোবাইলে কথা বলার সময় দাড়িয়ে বা হেটে কথা বলুন।

নিয়মিত সাবান পানিতে হাত পরিষ্কার করুন ও বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থার বিধিনিয়ম মেনে চলুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এতে আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উভয়ই ভাল থাকবে।

কিছু ব্যায়ামঃ

ব্রিদিংএক্সারসাইজঃ সোজা হয়ে বসে হাত দুটো রানের উপরে রাখুন।এবার নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে ৩-৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং মুখ দিয়ে ছাড়ুন। এটি দিনে ১০-১৫ বার করে ৩-৪ বেলা করতে পারেন।

বসে মেডিটেশনঃ

মেরুদণ্ড সোজা করে একটি  সমতল মেঝেতে দুই পা ক্রস করে বসুন।এরপর চোখ বন্ধ করে,পুরো শরীর রিলাক্স করুন, গভীর শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এই সময় অন্য কোনো কিছুতে মনোযোগ না দিয়ে শুধুমাত্র শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিন। এই অবস্থায় ৫-১০ মিনিট থাকুন। এতে দেহ ও মন উভয়ই সতেজ হবে।

দেয়ালে পা উঠানোঃ

দেয়ালের কাছে শুয়ে কোমরকে দেয়ালের প্রায় ৫-১০ সেন্টিমিটার কাছাকাছি নিয়ে যান। এবার পা দুটো দেয়ালের উপর উঠান এবং রেস্টে রাখুন। তারপর চোখ বন্ধ করে পুরো শরীর রিলাক্স করুন, গভীর শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এই অবস্থায় ৫-১০ মিনিট থাকুন। এর ফলেও দেহ ও মন উভয়ই প্রশান্ত হবে।

পার্শ্বভাবে হাঁটু উঠানোঃ

সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত উঠান। এবার হাঁটু উঠিয়ে কনুই স্পর্শ করুন। ৩০-৬০ সেকেন্ড ধরে রাখুন ও ছাড়ুন।একইভাবে অন্যপাশ করুন। এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন বাড়বে।

 

সুপারম্যান পজিশনঃ

হাত ও হাঁটু দিয়ে ভর করে উপুর হয়ে ডান হাত সামনে ও বাম পা পিছনে উঠান, ৩০-৬০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। একইভাবে অন্য পাশ করুন। এটি ২০-৩০ বার এবং দিনে ৫ বার করতে পারেন।এর ফলে পেট, কোমর ও পিঠের মাংশপেশী শক্তিশালী হবে।

ব্রিজিং:

হাঁটু ভাজ করে পায়ের উপর ভর দিয়ে চিত হয়ে শুন।এবার কোমর উপরের দিকে উঠান। ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। এটি ২০-৩০ বার ও দিনে ৩-৪ বার করতে পারেন। এর ফলে কোমরের মাংশপেশী শক্তিশালী হবে। 

আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।

মেহেরুন-নেসা
ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ