সারাদেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে ৪৭১৮১

সারাদেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে ৪৭১৮১

ছবিঃ সংগ্রহীত

সকল প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করে বিশ্বের দুইশরও বেশ দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের গতি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও যেকোনো সময় প্রকট আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

তবে এ সংক্রমণ যাতে ব্যাপক বিস্তুতি লাভ করতে না পারে সেজন্য দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সর্বোচ্চ সতর্কতায় মাঠে নামানো হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে। 

আক্রান্ত হতে পারে এমন সন্দেহে সারাদেশে এখনো নিজ বাড়িতে পৃথক স্থানে রাখা বা হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশফেরতদের মাধ্যমে ভাইরাসটির খুব দ্রুত ছড়াতে পারে আশঙ্কায় তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। 

কিন্তু দেড় লাখের মতো প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরলেও প্রত্যেকে এ ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অনেকে তথ্য গোপন করায় সমস্যা আরও প্রকোট হচ্ছে। তবে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্যমতে গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় এসেছেন চার হাজার ৭৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ২৪ জন। ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৪ জন।

এ নিয়ে বর্তমানে সারাদেশে প্রবাসীসহ ৪৭ হাজার ১৮১ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। যাদের মধ্যে নির্দিষ্ট ১৪ দিনের মেয়াদ পূর্ণ করায় সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫৭৪ জন।

গত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে। তথ্য বলছে, এক সপ্তাহে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় এসেছে ৩০ হাজার ১৬৭ জন। অথচ এক সপ্তাহ আগে (২০ মার্চ) হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪ হাজার ২৬৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ১৮১ জনে। 

হোম কোয়ারেন্টাইন ছাড়াও এ সময় হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন মোট ১৮০ জন। তাদের মধ্যে ২৯ জন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৫১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, সামাজিকভাবে রোগটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থানের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়ক হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছে। পাশাপাশি রোগটি ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য আইসিইউ সুবিধাসহ হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এতদিন করোনাভাইরাসের নমুনা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হলেও এখন আরও তিনটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষা শুরু হয়েছে এবং হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য কিট সংগ্রহ, চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য স্টাফদের জন্য পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্টসহ (পিপিই) প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণ করা হচ্ছে।

দেশে শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত ৪৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন।