রাশিয়ার এস-৪০০ এর প্রথম চালান আঙ্কারায়

রাশিয়ার এস-৪০০ এর প্রথম চালান আঙ্কারায়

ছবি সংগৃহিত।

 

 

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার মুরিটিড বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছে গেছে রুশ নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ এর প্রথম চালান। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ খবর নিশ্চিত করেছে।


এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১২ জুলাই থেকে দীর্ঘ পাল্লার আঞ্চলিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার যন্ত্রাংশ মুরটিড বিমানবন্দরে আসা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম চালানটি এসে গেছে। রুশ সামরিক-কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে তাস জানিয়েছে, এস-৪০০ এর যন্ত্রাংশ বহনকারী আরেকটি বিমান শিগগিরই উড়াল দেবে। এরপর গ্রীষ্মের শেষ দিকে সমুদ্রপথে ১২০টি গাইডেড মিসাইলের তৃতীয় একটি বহর তুরস্কে পাঠানো হবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে সবকিছু হচ্ছে। সব ধরনের বাধ্যবাধকতাই মেনে চলা হচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে তুরস্কের সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে রজব তাইয়েব এরদোগানের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠতার দিকে গেছে। বিপরীতে এটা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের সম্পর্কের জন্য বিপত্তি হয়েও দাঁড়িয়েছে। সিরিয়া সঙ্কটের মতোই দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি আরো জটিলতার দিকে যাচ্ছে।


মার্কিন কর্মকর্তারা বহু আগ থেকেই হুঁশিয়ারি করে আসছিলেন, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে উন্নত এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান আটকে দেয়া হবে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মাধ্যমে এফ-৩৫ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে পারে পেন্টাগন। ভবিষ্যতের সামরিক বিমান হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে এফ-৩৫ জেটকে।
ইতিহাসের সবচেয়ে দামি এই বিমানের প্রাণঘাতী হামলা ছাড়াও বৈচিত্র্যময় দক্ষতা রয়েছে। স্টেলথ সক্ষমতা, শব্দের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন, প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতা ও সেনসর ফিউশন প্রযুক্তিসম্পন্ন এই বিমান। তবে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয়ের দায়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে এস-৪০০ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ন্যাটো। চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন জানিয়েছিল, তুরস্ক এই ব্যবস্থা সংগ্রহ করলে তাদের বাস্তবিক ও নেতিবাচক পরিণতি ভোগ করতে হবে। তবে তুরস্ক বলেছে, তারা এস-৪০০ সংগ্রহের ক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পায় না। তারা বলেছিল, এই ব্যবস্থা কেনার চুক্তি চূড়ান্তপর্যায়ে রয়েছে এবং এখন এটি হস্তান্তরের তারিখ নির্ধারণ করা নিয়ে মস্কোর সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে আঙ্কারা।


তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার জন্য ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে চুক্তি সই করেন। কিন্তু মার্কিন সরকার শুরু থেকেই এ চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে বলেছে, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হিসেবে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা তুরস্কের উচিত হবে না। এ হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও আঙ্কারা মস্কোর কাছ থেকে এস-৪০০ সংগ্রহ করলে তুরস্কের ওপর তিন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে।