এ সময়ে ত্বকের যত্বে যা করবেন

এ সময়ে ত্বকের যত্বে যা করবেন

সংগৃহীত ছবি

 

  

 

 

বর্ষা ঋতু যেন সবারই কাম্য। তীব্র গরমের পর যেন একটু স্বস্তি মেলে এ ঋতুতেই। তাছাড়া এ সময় বাতাসে ধুলোবালির প্রকোপ থাকে কম। এক কথায় বলা যায়, এ সময়টা পারতপক্ষে আরামদায়ক। তবে রোদের প্রকোপ কম থাকলেও এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ সময় ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে প্রয়োজন ঋতু উপযোগী যত্নের।

এ সময় ত্বকের পরিচ্ছন্নতায় দিনে দু-তিনবার ভালো ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে হবে। এতে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল ও ময়লা কেটে যাবে এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হবে না। এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। এতে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যাবে। শরীরে টক্সিন জমা হলে ত্বকে ব্রণ ও দাগ দেখা দেয়। ত্বকে প্যাক ব্যবহার করলে চেষ্টা করুন ভেষজ বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তা তৈরি করার। রাসায়নিক উপাদানে তৈরি প্যাক ত্বকের উপকারের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিই বেশি সাধন করে। বর্ষাকালে বাইরে বের হওয়ার সময় চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব কম মেকআপ ব্যবহার করার। না করলেই ভালো। কারণ মেকআপ ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। আর বৃষ্টিতে ভিজলে ব্যাকটেরিয়াও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। ফলে র্যাশ ও ব্রণ হতে পারে। বৃষ্টিদিনে সাধারণত ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া হয়, কিন্তু এ সময় উচিত এসব খাবার এড়িয়ে যাওয়া। কারণ তেলযুক্ত খাবার ত্বকের জন্য মোটেও ভালো নয়।

বর্ষায় ত্বকের পরিচ্ছন্নতায় এমন ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে, যা ত্বকের গভীর থেকে তেল-ময়লা বের করে ফেলতে পারে আর ত্বক প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে। এজন্য ত্বক পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন নারকেল তেল, টি ট্রি অয়েল, আপেল সিডার ভিনেগার, অ্যালোভেরা, মধু, লেবু ও গোলাপজল।

ত্বক পরিচ্ছন্ন করার পরও অনেক সময় কিছু মেকআপ ত্বকে লেগে থাকতে পারে, সেগুলো পুরোপুরি মুছে ফেলতে ত্বকে টোনার ব্যবহার করতে হবে। গ্রিন টি, লেবুর রস, গোলাপজল, শসার রস ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান টোনার হিসেবে খুবই ভালো।

মুলতানি মাটি এ ঋতুতে ত্বকের জন্য খুবই উপযোগী। মুলতানি মাটি ও গোলাপজল দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগান। রাতের বেলা এ দুটো উপকরণ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে এয়ারটাইট বয়ামে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। পরদিন তিনবেলা ব্যবহার করুন। মুখে যদি ব্রণ থাকে, তাহলে মুলতানি মাটি, দারচিনি গুঁড়ো (পরিমাণ মতো), চন্দন গুঁড়ো ও নিমপাতা বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে রোজ লাগান। ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে পেতে বেসন, হলুদ গুঁড়ো, লেবুর রস ও গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে আপনাআপনি জেল্লা ফুটে উঠবে।

বর্ষায় পায়ের যত্ন

বর্ষাকালে পায়ের ত্বক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এ সময় রাস্তায় অনেক কাদাপানি থাকে। ফলে পায়ের গোড়ালি ও নখে ময়লা জমে। তাই প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। বাড়িতে ফিরেই ভালো কোনো অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান বা ফুটওয়াশ দিয়ে পা ধুয়ে ফেলতে হবে। খুব ভালো হয়, যদি ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে ৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখা যায়। এতে পা ভালোভাবে পরিষ্কার হবে ও আরামবোধ হবে।

পায়ের ত্বকে সমস্যা দেখা দেয়, যখন এখানে প্রচুর মরা কোষ জন্মে। মরা কোষ ঝরাতে রোজ গোসলের সময় ব্রাশ ও পামিস স্টোন দিয়ে পা, গোড়ালি ও আঙুলের মধ্যস্থান পরিষ্কার করতে হবে। এতে করে পায়ের ত্বক থাকবে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। এছাড়া সপ্তাহে অন্তত দুবার বাড়িতে বসে পেডিকিউর করতে হবে। এর জন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। ঈষদুষ্ণ গরমজলে লেবুর রস, লবণ, শ্যাম্পু ও বেকিং পাউডার মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর ব্রাশ ও পামিস স্টোন দিয়ে ঘষে পা ধুয়ে ফেলুন। সবশেষে ভারী ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না।