কুরআনে মানবাধিকার

কুরআনে মানবাধিকার

কুরআন

 

সারা বিশ্বে এক শ’ কোটির বেশি মুসলমানের জীবনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে আল-কুরআন। এই প্রেক্ষাপটে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন : মানবাধিকার সম্পর্কে কুরআন কিছু বলে থাকলে, সেটা কী?

কুরআনের একটা বড় অংশে আলোকপাত করা হয়েছে মানুষকে গতানুগতিকতা, স্বেচ্ছাচারিতা (ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি), গোত্রবাদ, বর্ণবাদ, যৌনবাদ, দাসত্বসহ যা কিছু মানুষের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছার প্রতিবন্ধক, তা থেকে মুক্ত করার ওপর। কুরআনের একটি অনন্য ঘোষণা হলোÑ ‘তোমার প্রভুর দিকেই চূড়ান্ত লক্ষ্য’ (সূরা আন্ নাজম, আয়াত ৪২)।

সব মানুষের যেসব অধিকার মৌলিক, গৌরবময় কুরআন সেগুলো সমর্থন করে। আমাদের মানবিকতার মধ্যে এসব অধিকার এত গভীরভাবে প্রোথিত যে, সেগুলোর অস্বীকৃতি বা লঙ্ঘনের অর্থ হচ্ছে, সেটাকেই নাকচ বা অবনমিত করা, যা আমাদের মানুষ বানিয়েছে।

মৌলিক অধিকারগুলো আল্লাহই দিয়েছেন; যাতে মানুষ হিসেবে আমাদের সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হতে পারে। আমাদের কাছ থেকে আল্লাহতায়ালা কী চান; আমরা কোন লক্ষ্যে প্রয়াস চালাব, বাঁচব এবং মরব, মৌলিক অধিকারগুলো তার রূপরেখা তুলে ধরে।

আল্লাহ যেসব অধিকার সৃষ্টি বা প্রদান করেছেন, পার্থিব কোনো শাসক কিংবা মানুষের কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন সেগুলো বাতিল করে দিতে পারে না। চিরন্তন ও অপরিবর্তনীয় এসব আইন প্রয়োগ করা উচিত। কারণ, আল্লাহতায়ালা যা-ই করুন না কেন, তা করা হয় ন্যায়ানুগ লক্ষ্যেই। 

জীবনের অধিকার

আল-কুরআনে মানব জীবনের পবিত্রতা ও পরম মর্যাদাকে তুলে ধরা হয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলছেন, আর তোমরা মানুষের প্রাণ বধ করো না, যাকে আল্লাহ বানিয়েছেন পবিত্র, ন্যায়বিচারের স্বার্থ ব্যতিরেকে। তিনি এটা করতে তোমাদের আদেশ দিয়েছেন যাতে তোমরা উপলব্ধি করতে পারো (আল-আনআম : আয়াত ১৫১)।

কুরআন এটাই তুলে ধরে যে, প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক ব্যক্তির জীবন গোটা মানবজাতির জীবনের সাথে তুলনীয়। সে কারণে, পরম যতœ ও সতর্কতামূলক আচরণ করতে হবে মানুষের জীবনের ব্যাপারে। আল্লাহ বলছেন, ‘এ কারণে আমরা বনি ইসরাইলের জন্য এই নির্দেশ জারি করেছিলাম যে, কোনো মানুষকে যে-ই হত্যা করুকÑ যদি তা কাউকে হত্যা কিংবা দেশে অন্যায়ের বদলা হিসেবে না হয়Ñ এটা এমন, যেন তারা গোটা মানবজাতিকেই হত্যা করল, আর যে কেউ মানুষকে জীবিত রাখে (অর্থাৎ হত্যা করে না), এটা এমন যেন, তারা পুরো মানবজাতিকেই রাখল জীবিত (আল-মায়িদাহ : আয়াত ৩২)।

মর্যাদা লাভের অধিকার

সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলছেন : নিশ্চয়ই, আমরা আদমের সন্তানদের মর্যাদা দিয়েছি (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত নম্বর ৭০)। মানুষকে মর্যাদা লাভের যোগ্য বলে গণ্য করা হয়। কেননা, সৃষ্টি জগতের সবকিছুর মধ্যে কেবল মানুষই আল্লাহ প্রদত্ত আমানত গ্রহণ করেছে নিজেদের ইচ্ছায়। এর একটি দিক হলো, ইচ্ছার স্বাধীনতা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, নিশ্চয়ই আমরা এই আমানত দিয়েছিলাম আকাশ ও পৃথিবীর ও পর্বতমালাকে; কিন্তু তারা এর ভার বহনে কুণ্ঠিত ও ভীত হলো; আর মানুষ তা গ্রহণ করে নিলো; প্রকৃতপক্ষে সে অন্যায়কারী, অজ্ঞ (সূরা আল-আহযাব, আয়াত ৭২)।

মানুষ ইচ্ছার স্বাধীনতাকে প্রয়োগ করতে পারে। কারণ, তাদের সেই বিচারবুদ্ধি রয়েছে যা তাদেরকে সৃষ্টি জগতের আর সব কিছু থেকে স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত করে তুলেছে। আল-কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলছেন, আর যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করব (আল-বাকারাহ, আয়াত ৩০)।

মন্দ ও অসৎ কাজ করে মানুষ ‘নিচদের মধ্যে সর্বনিম্নে’ নেমে যেতে পারে। অপর দিকে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেছেন, মানুষকে তৈরি করা হয়েছে ‘সর্বোত্তম অবয়ব দিয়ে।’ তিনি বলছেন, প্রকৃতপক্ষে, আমরা মানুষকে সৃজন করেছি সর্বোত্তম অবয়ব দিয়ে। অতঃপর তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি নিচ থেকে আরো নিচে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎ কাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে অশেষ পুরস্কার (আত তীন, আয়াত ৪-৬)।

মানুষ চিন্তাভাবনা, অন্যায় থেকে ন্যায়কে পৃথক করা এবং ভালো কাজ করা ও মন্দ কাজ পরিহারের সামর্থ্য রাখে। মানুষ হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের মাঝেই অঙ্গীকার নিহিত। তা হলো, এই পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি বা খলিফা হওয়ার মর্যাদা। এ কারণে সব মানুষকে সম্মান এবং তাদের ‘মানুষ হওয়া’কে একটি লক্ষ্যরূপে বিবেচনা করতে হবে।

ন্যায়বিচারের অধিকার

ন্যায়বিচার লাভের অধিকার এবং ন্যায়বিচার করার দায়িত্বকে কুরআনে বিরাট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলছেন, হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর জন্য ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে থাকবে অবিচল এবং কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতার দরুন কখনো ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার করো; এটাই খোদাভীতির বেশি নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় করো; তোমরা যা কিছু করে থাকো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত। (আল-মায়িদাহ, আয়াত নম্বর ৮)।

সূরা আন নিসাতেও ন্যায়বিচারকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছেÑ হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান করো, এতে তোমাদের নিজের বা পিতামাতার কিংবা নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের যদি ক্ষতি হয়, তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাক্সক্ষী তোমাদের চেয়ে বেশি। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বলো কিংবা যাও পাশ কাটিয়ে, তাহলে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পর্কেই অবগত (সূরা আন নিসা, আয়াত নম্বর ১৩৫)।

ন্যায়বিচার প্রসঙ্গে আল-কুরআনে দু’টি ধারণার উল্লেখ দেখা যায়। একটি ‘আদল’, অন্যটি ‘ইহসান’। আরবি ভাষায় ন্যায়বিচারকে ‘আদল’ এবং পরিপূর্ণতা বা সদাচরণকে ‘ইহসান’ বলা হয়। আল্লাহতায়ালা বলছেন, আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ ও অবাধ্যতা করতে বারণ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে তোমরা মনে রাখো (আন নাহল, আয়াত ৯০)।

আদল ও ইহসান, দুটোরই নির্দেশ দেয়া হয়েছে ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং দুটোই ভারসাম্যের ধারণার সাথে সম্পর্কিত। অবশ্য, ধারণা দুটোর অর্থ এক নয়। একজন বিখ্যাত মুসলিম পণ্ডিতের মতে, আদল মানে ‘সমান; বেশিও না, কমও না।’ এর ব্যাখ্যাস্বরূপ বলা হয়েছে, আদালতে বিচার সংশ্লিষ্ট দু’পক্ষকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে সমানভাবে এবং কোনো একটি পক্ষের প্রতি অন্যায় কোনো পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। ন্যায়বিচারের অর্থ, এমনভাবে ওজন করা, যাতে দাঁড়িপাল্লার কাঁটা নিখুঁত অবস্থানে থাকে।

একজন প্রখ্যাত মুফাসসির লিখেছেন, ‘আধিক্য বর্জন ছাড়া ন্যায়বিচার আর কী হতে পারে? বেশি বা কম, কোনোটাই হওয়া উচিত নয়। এ জন্যই দাঁড়িপাল্লা ন্যায়বিচারের প্রতীক।’ 

পাছে কেউ কম-বেশি করে ফেলে, এ জন্য আল-কুরআনে বলা হয়েছে, কোনো মানুষ অন্য কারো বোঝা বইতে পারে না কিংবা জোর প্রয়াস ছাড়া কোনো কিছু পারে না অর্জন করতে। আল্লাহতায়ালা বলছেন, তাকে কি জানানো হয়নি, যা আছে মূসার কিতাবে এবং ইবরাহিমের কিতাবে, যে তার দায়িত্ব পালন করেছিল? কিতাবে এই আছে যে, কোনো ব্যক্তি কারো গুনাহ নিজে বহন করবে না এবং মানুষ সেটাই পায়, যার জন্য সে চেষ্টা করে (সূরা আন নাজম, আয়াত ৩৬-৩৯)।

যেহেতু ব্যক্তির গুণ আদলের অংশ, তাই কুরআন শিক্ষা দিয়েছে যে, বংশ, নারী-পুরুষ ভেদ, সম্পদ, বৈষয়িক সাফল্যের ওপর নির্ভর করে না গুণ থাকা, না থাকা। এটা অর্জিত হয় ন্যায় ও সত্যের অনুসরণের মাধ্যমে। সৎকর্ম গঠিত হয় সঠিক ঈমান বা বিশ্বাস এবং ন্যায়ানুগ আমল বা কর্মের সমাহারে। আল্লাহতায়ালা সুস্পষ্টভাবে বলছেনÑ সৎকর্ম কেবল এটা নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে। বরং বড় সৎকাজ হলো, ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামতের দিবসের ওপর,  ফেরেশতাদের ওপর, আসমানি কিতাবের ওপর এবং সব নবী-রাসূলের (আ:) ওপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই ভালোবাসায় আত্মীয়স্বজন, ইয়াতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্য। আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, দান করে জাকাত এবং যারা প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য ধারণকারী, তারাই সত্যাশ্রয়ী, আর পরহেজগার তারাই (আল-বাকারাহ, আয়াত নম্বর ১৭৭)। কুরআনে আরো উল্লেখ আছে, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সবচেয়ে বেশি পরহেজগার। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সব কিছুর খবর রাখেন (আল হুজুরাত, আয়াত নম্বর ১৩)।

সূরায়ে আন নিসায় পরোক্ষ ঈমানদার এবং যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, এই দু’য়ের মাঝে সুস্পষ্ট পার্থক্য নির্দেশ করা হয়েছে। ‘গৃহে উপবিষ্ট মুসলমানÑ যাদের কোনো সঙ্গত ওজর বা কারণ নেইÑ এবং ওই মুসলমান যারা জানমাল দিয়ে জিহাদ করে আল্লাহর পথে, সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন গৃহে উপবিষ্ট ব্যক্তিদের তুলনায় এবং আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন প্রত্যেকের সাথেই। আল্লাহ মুজাহিদদের বসে থাকা লোকজনের ওপর শ্রেষ্ঠ করেছেন প্রতিদান দিয়ে (আন নিসা, আয়াত ৯৫)।

আদলের চেতনায় বিশেষ পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রাখা হয় শাস্তির প্রেক্ষাপটে। পুরস্কারের প্রেক্ষাপটেও এটা করা হয়ে থাকে। শাস্তির ব্যাপারে দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলা যায়, ব্যভিচারের দায়ে আল-কুরআনে একই রকম শাস্তির বিধান রয়েছে দোষী পুরুষ বা নারীর জন্য। অবশ্য কুরআন বিভিন্ন ধরনের নারীদের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা রেখেছে। একই অপরাধের দায়ে দাসীকে শাস্তি দেয়া হয়েছিল অর্ধেক। অন্য দিকে রাসূল সা:-এর স্ত্রীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল এটা জানিয়ে যে, একজন ‘মুক্ত’ মুসলিম নারীর যে শাস্তি প্রাপ্য, একই অপরাধ করলে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে তাঁদের ।

এখানে এটা সুস্পষ্ট যে, কুরআন উন্নতমানের নৈতিক আদর্শ উপস্থাপন করেছে। বিশেষত মহানবী সা:-এর সহধর্মিনীদের বেলায়। তাঁদের কার্যকলাপের মাননির্ধারক তাৎপর্য রয়েছে মুসলিম সমাজের কাছে। একই সাথে বলা যায়, ওপরের দৃষ্টান্তে অস্বাধীন বা দাসী নারীর জন্য আল্লাহতায়ালার করুণাও প্রতিফলিত। তারা ছিল সমাজের বঞ্চিত মানুষ।

কুরআন শরিফে বারবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আদল বা সুবিচার কায়েমের জন্য। এ ক্ষেত্রে এটাও জানা দরকার, কুরআনে ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে আদলের গণ্ডি পেরিয়ে ইহসান করতেও বলা হয়েছে। ‘ইহসান’-এর শাব্দিক অর্থ ‘ক্ষতি বা ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ এ বিষয়টি বোঝার জন্য কুরআনে বর্ণিত আদর্শ উম্মাহ বা সমাজের প্রকৃতি উপলব্ধি করা প্রয়োজন।

‘উম্মাহ’ শব্দটি এসেছে ‘উম্ম্’ থেকে। আরবিতে ‘উম্ম্’ মানে মাতা। আদর্শ উম্মাহ এর সব সদস্যের তেমন যতœ নেয়, যেমন করে আদর্শ মাতা তার সব সন্তানকে যতœ করে থাকেন। তিনি এটা করেন এ কথা জেনে যে, সন্তানদের সবাই সমান নয় এবং তাদের প্রত্যেকের আছে ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা।

কোনো সন্তানের প্রতি যদি এমন পক্ষপাতিত্ব দেখানো হয়, যা তার প্রাপ্য নয়, তাহলে কাজটা অন্যায় হবে। তবে মা তার অন্য সন্তানদের চেয়ে প্রতিবন্ধী সন্তানের বেশি যতœ নিলে তা অন্যায্য বলে বিবেচিত হয় না। প্রকৃত অর্থে, এমন মাতা ইহসানের নমুনাই তুলে ধরছেন। কারণ, তার যে সন্তানটি দৈনন্দিন জীবনের কিছু বা সব মৌলিক কাজ করতে অক্ষম, তিনি তার সে ঘাটতি পূরণে সাহায্য করছেন। এভাবে মানবসমাজে নারী, ইয়াতিম, দাস-দাসী, দরিদ্র, দুস্থ, অক্ষম, সংখ্যালঘুসহ যারা সুবিধাবঞ্চিত, তাদের প্রতি সহানুভূতির বহিঃপ্রকাশের নাম ইহসান।

লেখিকা : ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনালের সদস্যা, পুরস্কার বিজয়ী বুদ্ধিজীবী, ইসলামের উদারতা এবং আন্তঃধর্ম সংলাপের অনন্য কণ্ঠস্বর, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিল ভার্সিটির ধর্মীয় ও মানবিক বিষয়ের প্রফেসর। ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠা করেন ‘পাকিস্তানে সহিংসতার শিকার নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।’ ভাষান্তর : মীযানুল করীম