“বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি বেঁচে আছি”

“বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি বেঁচে আছি”

ভয়ংকর বিপদ থে‌কে অল্পের জন্য রক্ষা পে‌লেন জন‌প্রিয় অ‌ভি‌নেত্রী শাহনাজ খু‌শি।

চার মাস পর করোনার মধ্যে প্রথম শুটিং এ যাচ্ছি,খারাপ লাগা নিয়ে পরশু এমন একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম।নাহ,আমাকে অদৃশ্য করোনা এখনো ছোঁয়নি,আমাকে মৃত্যুর দুয়ারে নিয়েছিল দৃশ্যমান ভয়াবহ এ পরিবহন সেক্টরের অরাজকতা!! এটা আমার গাড়ী!! এই গাড়ীর মধ্যে আমি ছিলাম!!! একেবারেই অলৌকিক কিছু না হলে আমার বাঁচার কথা নয়! আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি বেঁচে আছি,ভাল আছি! কত বড় অরাজকতার মধ্যে আমরা বাস করছি,তা ভুক্তভুগি সবাই জানি।

আজ স্বাস্থ্যখাত সামনে এসেছে বলে,শাহেদদের মত অসংখ্য অসংখ্য কালপিট সামনে আসছে,পরিবহন খাতটা দীর্ঘকাল হলই এমন! প্রতিদিন এমন অসংখ্য দুর্ঘটনায় শেষ হচ্ছে হাজারো পরিবার,খালি হচ্ছে মায়ের কোল,সন্তানের বুক! কিন্তু কোন প্রতিকার নেই।স্বাস্থ্যখাতের চেয়েও আরও দুর্গম/অন্ধকার/অন্যায়ে ঠাসা এ পরিবহনখাত! ছবিতে যে বিশাল আকারের কার্গো,এটিই গাড়ীর উপর ওঠেছে,ঠেলে নিয়ে পেছনে থামা ট্রাকের সাথে চেপে ধরছে,সেটি চালাচ্ছিল হেলপার,বয়স ১৬/১৭।ড্রাইভার যিনি,উনিও তাই।গুরুত্বপুর্ন কথা হল,ড্রাইভারের কোন লাইসেন্স নাই!!!

এমন নাকি চলে,কোন সমস্যা হয় না! আমি আসলে পুরা সেন্সে ছিলাম না,কিছু কিছু কথা আমি ভুলতে পারছি না!!পুবাইল পুলিশ/আমার শুটিং এর ছেলেরা/আমার বাসার মানুষ সবাই চলে এসেছে।আমি তখন থর কম্প একটা মাংস পিন্ড কেবল।কেউ একজন ক্ষতিপুরনের কথা বলায় ড্রাইভার বলছে,"মানুষ মাইরালায় ট্যাহা লাগে না,বাঁইচ্যা আছে,তাও ট্যাহা লাগবো!!!!!!! "সামনের টেম্পোর ৬ জনরে বাঁচান্যার লাই ২ জনরে মাইরা দেয়া কুনু বিষয় না!!!!"এমন অসংগ্ন কথা বার্তা।মীরের বাজার পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা পুলিশ এবং থানা পুলিশ ভাইয়েরা যা করেছেন আমার জন্য তা সারাজীবন কোনদিন ভুলবো না।সেই সাথে জেনে এসেছি তাদের নেতৃস্থানীয়দের এবং পরিবহন লীডার বলয়ের কাছে অসহায়ত্বের কথা!!

আমি কাল থেকে অপ্রকৃতস্থ প্রায়! খেতে পারছি না,চোখ বন্ধ করতে পারছি না,আমার ছেলে দুইটা এ ভয়াবহতায় এলোমেলো,বাচ্চা ছেলেটা রাতে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়েছে! আমি কিছু বুঝতে চাই না,আমি আমার দেশের প্রতি/আইনের প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধা এবং দায়িত্ববান।আমার এবং আমার পরিবারের দ্বারা দেশের বিন্দু পরিমান সম্মান ক্ষুন্ন হয় নাই,বরং দেশের মর্যাদা রক্ষায় আমরা বদ্ধ পরিকর।আমি শুধু আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই মাননীয়! জীবনের এত যুদ্ধ,এত শিক্ষার পর,একজন অশিক্ষিত নেশাগ্রস্ত লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারের হাতে জীবন দিতে রাজী নই।

দয়া করে আইন সংশোধন করে ,আমাদের জীবনকে নিরাপদ করুন।আমি আমার সন্তানকে দায়িত্বপুর্ন নাগরিক করবার দায়িত্বভার নিষ্ঠার সাথে পালন করছি।আপনারা আমাদের জীবন/পথকে নিরাপদ করুন মহামান্য!! আমার পরিবার এবং আমি,দাফনের জন্য টাকা আর ক্ষতিপুরনের কয়েক লাখ টাকা চাই না।আমরা ভর্তা ভাত খেয়ে,একে অপরের জীবিত সুস্থ সান্নিধ্যে বাঁচতে চাই..

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)