ট্রানজিটের ভারতীয় ৪ কন্টেইনার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে

ট্রানজিটের ভারতীয় ৪ কন্টেইনার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে

ট্রানজিটের পণ্যবাহী কন্টেইনার সমূহ ট্রেইলরযোগে সড়কপথে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ভারতের ত্রিপুরা চলে যাবে।

ভারতের সাথে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় কলকাতা থেকে চার কনটেইনার পণ্য নিয়ে ‘এমভি সেঁজুতি’ নামে একটি জাহাজ আজ ভোররাতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। মূলত চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে সড়কপথে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনের প্রথম ‘ট্রায়াল রান’ এটি।

চট্টগ্রাম বন্দর ও জাহাজটির শিপিং এজেন্ট ম্যাঙ্গো শিপিং লাইনসূত্রে জানা গেছে, গত রোববার ভারতের হলদিয়ার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে জাহাজটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে কলকাতা ছেড়ে আসে। এতে ৪ কনটেইনার ট্রানজিট পণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি কারকের মোট ২২১ কন্টেইনার পণ্য আছে। ট্রানজিটের ৪ কন্টেইনারে টিএমটি বার ও ডাল জাতীয় ১০০ টনের মতো পণ্য রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ‘সেঁজুতি’কে বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে ভিড়ানো হয়েছে। জাহাজ থেকে খালাসের পর ট্রানজিটের পণ্যবাহী এসব কন্টেইনার ট্রেইলরযোগে সড়কপথে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ভারতের ত্রিপুরাচলে যাবে।
উল্লেখ্য, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের দু’টি বন্দর চট্টগ্রাম ও মংলা ব্যবহার করে নৌপথে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে সচিব পর্যায়ে চুক্তি হয়। এরপর ব্যাপক আলোচনার পর চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়।

বন্দর সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের গায়ে ‘ট্রানজিট পোর্ট’ হিসেবে আজ নতুন ফলক যুক্ত হলো। এতোদিন আমরা ছিলাম ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট। এ নতুন অধ্যায়ের সূচনার ফলে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার সযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কেননা এ চুক্তির আওতায় প্রতিটি কনটেইনারের বিপরীতে আমাদের কাস্টমস সরকারি মাশুল আদায় করবে। বন্দরও তাদের ব্যবহার ফি আদায় করবে। জাহাজ থেকে খালাসের পর বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহারের জন্যও সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্ধারিত মাশুল আদায় করবে।
এ ছাড়া দেশের শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, কার্গো পরিবহন এজেন্টের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সামগ্রিক কর্মকান্ড বিভিন্ন ধাপে এ দেশের জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।

জাফর আলম বলেন, “এখন প্রশ্ন ট্রানজিটের আওতায় পণ্য পরিবহনে আমাদের সক্ষমতা নিয়ে। চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ৩০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে। আমি মনে করি, বর্তমান সক্ষমতায় আমরা ভারতের ট্রানজিটের পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারবো।”
এছাড়া, আগামী বছর আরো তিনটি টার্মিনাল চালু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারপরও ভারতীয় ট্রানজিটের পণ্যের পরিমাণ কেমন হয় তা নিয়ে আমাদের একটা স্টাডি করতে হবে। যদি অনেক বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।’

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পণ্যবাহী চারটি কন্টেইনারের ট্রায়াল রান এটি। বিদ্যমান নীতিমালা (ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভ) অনুযায়ী জাহাজটি বার্থিং পাবে ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে নির্ধারিত সাত প্রকারের ফি আদায় করা হবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব ফি আদায় করবে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরও ‘ব্যবহার ট্যারিফ’ পাবে। বাসস