একটি হৃদয়বিদারক মৃত্যু

একটি হৃদয়বিদারক মৃত্যু

শাহ জাহান

 ঈদুল আযহা। ঈদের দিন। ঈদের নামাজ শেষ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গরু জবাই করে গোশত কাটাকুটি শেষ করে ছোট বোনের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে ছিলেন গোশত নিয়ে। যাওয়ার আগে সর্বশেষ একটা ছবিও আপ্লোড দিয়েছিলেন। বোন হয়তো জানত না ভাইয়ের এটাই সর্বশেষ তার কাছে বেড়াতে যাওয়া।

বোনের শ্বশুর বাড়ি থেকে ফিরে আসার সময় এক্সিডেন্টে খোদার ডাকে মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন করলেন। মৃত্যুর সংবাদটা বাহিরে বলাবলি করতেই ছুটে যায়, শুনলাম শাহ জাহান স্যার মারা গেছেন। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। কানকে বললাম যেন একটা মিথ্যা খবর হয়। কিন্তু চিরন্তন সত্য মৃত্যুই সত্য হল। খবরটা বিশ্বাস করতে পারছিলামই না শরীর টা অবশ হয়ে উঠেছিল, চোখ গুলো অশ্রুসিক্ত হয়ে টলমল হয়ে উঠল। ইচ্ছে হলো চিৎকার করে কান্না করি। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না।

 বুকে ব্যাথা অনুভব হলো। সেই শাহজাহান যাকে বলতাম আমাকে 'তুমি' করে বলবেন কিন্তু 'আপনি' করেই বলত তিনি। আমি স্যার ডাকলে ভাই ডাকতে বলতেন। যখন তার মৃত দেহ দেখতে গেলাম, তখন লোকের ভিড় রাস্তায়, আমি এত মানুষ আর দেখিনি। পাটির উপর শুয়ে আছে নিথর দেহ। মাথায় আঘাতের রক্ত।

খোদাকে বললাম এই যেন একটি দুঃস্বপ্ন হয়। আশেপাশের মানুষের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছিল আকাশ, চোখের অশ্রু বৃষ্টিতে ভিজে যাবে সবদিক। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করেন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন।ইচ্ছে ছিল সৎ পুলিশ হবেন। রাষ্ট্রের সেবা করবেন। কিন্তু নিশ্বাস শেষেই চলে গেল সব স্বপ্ন। রক্তাক্ত শরীরটা কফিন মুড়িয়ে সাড়ে তিন হাত কবরের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় বিস্মিত হয়ে দেখি, সুঠাম দেহের মানুষ টা বিদায় জানাচ্ছে।

জানাজায় হাজার মানুষের চোখের প্রার্থনায় আল্লাহ যেন জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।

 

 ইকবাল মুনাওয়ার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।