বাংলাদেশকে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের সাথে যুক্ত হতে হবে : অধ্যাপক রেহমান সোবহান

বাংলাদেশকে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের সাথে যুক্ত হতে হবে : অধ্যাপক রেহমান সোবহান

ছবি সংগৃহিত।

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন,বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহকে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের সাথে যুক্ত হতে হবে। এটা তাদের এবং এশিয়ার স্বার্থেই করতে হবে।  ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে একটি ন্যায়ানুগ নয়া বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর অর্থনৈতিক ভরকেন্দ্র এখন এশিয়াতে এবং চীন সেটার নেতৃত্ব দিচ্ছে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্যা বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ এন্ড দ্যা নিউ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক ওয়ার্ডার’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান আরো বলেন, চীন তার উদ্বৃত্ত অর্থ তৃতীয় বিশ্বের অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। যারা এ কথা বলেন যে, চীনের এই বিনিয়োগ ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে এবং সেখানে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার উদাহরণ দেয়, তাদেরকে বলা প্রয়োজন, চীনের বিনিয়োগের বহু পূর্বেই পাকিস্তান তাদের ৭ লাখ সৈন্য পালতেই এই ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। প্রশ্নত্তোরের রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার যে বৈষম্য সৃষ্টি করছে তার কথা তিনি পূর্বেই বলেছিলেন।

আন্তর্জাতিক এই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এতে সভাপতিত্ব করেন। 

মেনন বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিমা দেশগুলোর বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে যেভাবে সাজিয়েছিল তাতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো এক চূড়ান্ত অসম পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে পৃথিবীর পরাধীন দেশগুলো উপনিবেশিক শাসনের কবলমুক্ত হতে স্বাধীন দেশ হিসেবে আবিভূত হচ্ছিল। তারা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিতে তাদের জায়গা নিতে পারছিল না।

মেনন বলেন, ওই সময়ে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সভাপতি আলজেরিয়ায় বুয়ারে বুমেদিন জাতিসংঘের মহাসচিবকে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সমতা বিধানের উদ্যোগ নিতে বলেন। জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব কখনোই এটা মেনে নিতে পারেনি। বরং বিশ্বায়নের নামে পশ্চিমাদের আরোপিত নয়া উদারনীতি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মানুষের জীবনমান আরো নেমে যায়। সৃষ্টি হয় বিপুল পরিমাণ ধনবৈষম্য।

সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ভিসি প্রফেসর মইনুল ইসলাম বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির আফিমে ডুবে আছে বর্তমান সরকার। এর ফলে ধনীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে ২০০ জনের বেশি ধনীর সম্পদ ২৫০ কোটি টাকার উপরে। অন্যদিকে গরিব আরো গরিব হচ্ছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে আয় বৈষম্য আরো বাড়বে।

সেমিনারে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, পশ্চিমা দুনিয়ার আধিপত্যবাদ এশিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়া যেন মাথা তুুলে দাঁড়াতে না পারে তারই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এখন এশিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। সেমিনার আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এনাম আহমেদ চৌধুরী।