কানের ময়লা পরিষ্কারে কতটা বিপজ্জনক জানেন

কানের ময়লা পরিষ্কারে কতটা বিপজ্জনক জানেন

ইয়ার বাডস ব্যবহার করা যাবে না কখনওই। ছবি:শাটারস্টক

ভার্চুয়াল বৈঠক, ওয়েবিনারের ফলে সর্বক্ষণ কানে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। ছোটদের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসও বড় রকমের ক্ষতি করছে। এর থেকেও বড় সমস্যা তৈরি হচ্ছে অন্য ভাবে। কানে অযথা খোঁচানোর বা বাডস ব্যবহারের অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বড়সড় বিপদ।

কোনও অস্বস্তি না হলেও শুধু স্বভাবের দোষে প্রায়ই কটন বাডস ব্যবহার করে কানে সুড়সুড়ি দিতে থাকেন অনেকেই। বিভিন্ন সংস্থা এমন কটন বাডস তৈরি করে। কিন্তু ইয়ার বাডসের ব্যবহার বিপদ ডেকে আনে।

করোনা আবহে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে আসতে ভয় পাচ্ছেন। এই অবহেলার কারণেই কিন্তু কানের সমস্যা আরও বাড়ছে। কানে ছত্রাকের সংক্রমণ বর্ষার মরসুমে একটু বাড়তে পারে, এ ছাড়াও এখন হেডফোনের ব্যবহারও বেড়েছে, তাই কোনও ছোটখাটো সমস্যা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, এমনই জানালেন নাক-কান-গলা চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত। কানে কোনও সমস্যা হলে বা ময়লা জমেছে মনে হলেই ইয়ার বাডস ব্যবহারের যে প্রবণতা রয়েছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক, এ কথা জানালেন নাক-কান-গলা চিকিৎসক দেবর্ষি রায়।

তিনি বললেন, ‘‘ইয়ার বাডস ব্যবহার করতে সবসময় বারণ করেন চিকিৎসকরা। কারণ কানের যা অ্যানাটমি বা গঠন, সে ক্ষেত্রে কানে যে ওয়্যাক্স বা ময়লা তৈরি হয়, তা চোয়ালের নাড়াচাড়াতেই বেরিয়ে আসে। খুব কম ক্ষেত্রেই গঠনের জন্য কানের মধ্যে আটকে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়।  কানের সমস্যা থেকে জটিলতা বেড়ে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়তে পারে। তাই কানে কিছু অস্বস্তি হচ্ছে মনে হলেই আঙুল দিয়ে খোঁচাখুঁচি, বাডস ব্যবহার ইত্যাদি একেবারেই করা যাবে না।’’

অতিরিক্ত ময়লা বা ওয়্যাক্স হাঁচি-কাশি-স্নান-ঘুম ইত্যাদি নানা জৈবিক কাজের হাত ধরেই বেরিয়ে যায়। আলাদা করে খুঁচিয়ে বার করতে হয় না। কারণ শরীর একটা নির্দিষ্ট ওজনের পর আর ময়লা নিজের ভিতরে রাখে না।

কেন বাডস জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা যাবে না

•  কানের যে ছিদ্র বা গহ্বর, সেটির ব্যাস আদতে ছোট। বাডসের ব্যাস সেই তুলনায় বেশি। ফলে কানের প্রাচীরে তৈরি হওয়া ওয়্যাক্স বা ময়লা আরও ভিতরে চলে যায়। এর থেকে সংক্রমণও হতে পারে।

•  কানের প্রাচীরে আঘাত লাগতে পারে।

• বাডস ভেঙে ভিতরে রয়ে যেতে পারে, যা মারাত্মক বিপজ্জনক।

• বাডসের তুলো থেকে সংক্রমণ হতে পারে।

• কটন বাডসের খোঁচানোয় প্রতিদিনই কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষতি হয়।

• কানের তরুণাস্থিও পড়ছে বিপদে। এরা নষ্ট হয়ে গিয়ে দুর্বল করে দিচ্ছে শ্রবণশক্তি। 

• শ্রবণশক্তি কমলে প্রভাব পড়বে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও। কারণ শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জায়গাটি কানেই রয়েছে।

অনেকের ক্ষেত্রে কানে ওয়্যাক্সের পরিমাণ বেশি, সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে

বাড়িতে আগে সর্ষের তেল ব্যবহার করা হত। এখন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল দিয়ে ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়, বললেন দেবর্ষিবাবু।

সমস্যা কমবে কীভাবে

১. অলিভ অয়েল ওয়্যাক্স জাতীয় পদার্থকে গলিয়ে দেয়, নরম করে। ফলে ময়লা বেরিয়ে যায়।

২.পানি ঢুকেছে মনে হলে তোয়ালের মাধ্যমে যতটা জল মুছে নেওয়া যায়, মুছে নিন। বাকিটা ঠিক সময়মতো বেরিয়ে যাবে।