এমসি কলেজে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ : ছাত্রদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ

এমসি কলেজে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ : ছাত্রদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ

ছবি:সংগৃহীত

সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর সকল ছাত্রকে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।শনিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে তাদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন জানান, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ শনিবার দুপুরে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এ বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরের কক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ সাইফুরকে আসামি করে অস্ত্র আইনে এ মামলা দায়ের করে।

সিলেট মহানগর পুলিশের শাহ পরাণ (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহপরান আব্দুল কাইয়ুম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ঘটনার দিন শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ওই ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি রামদা ও দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, সিলেট সরকারি এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে (১৯) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।

শনিবার ভোরে শাহপরান থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

জানা যায়, শুক্রবার বিকালে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য কলেজের গেটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চান। এতে স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধোর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। একপর্যায়ে স্ত্রী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের ৮/৯ জন নেতাকর্মী স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এসময় তাদের সাথে একটি প্রাইভেট কারও ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে প্রাইভেট কারটি তাদের জিম্মায় নেয় এবং ভুক্তভোগী নারীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) প্রেরণ করে।

প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ৬ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তারা হলেন এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও কলেজটিতে ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, একই শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।

এদের মধ্যে সাইফুর রহমানের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি দিরাইয়ে, মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়, অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জে, রনি হবিগঞ্জের এবং তারেক জগন্নাথপুরের বাসিন্দা। তাদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন শাহপরান থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) লিপটন পুরকায়স্থ।

তবে দীর্ঘদিন ধরে কলেজে কমিটি না থাকায় তাদের কোনো পদ-পদবি নেই। কিন্ত কলেজের রাজনীতিতে এসব নেতা সক্রিয় ছিলেন।

 

সূত্র : ইউএনবি