গরিব দেশের জন্য এক কোটি ভ্যাকসিন চায় ডব্লিউএইচও

গরিব দেশের জন্য এক কোটি ভ্যাকসিন চায় ডব্লিউএইচও

ফাইল ছবি

বিশ্বের গরিব তথা দরিদ্রতর দেশগুলোর জন্য করোনাভাইরাসের এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভি পরিচালিত কোভ্যাক্স কর্মসূচির সাথে অবিলম্বে এ পরিমাণ টিকা ভাগ করে নিতে বিভিন্ন দেশ এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর রয়টার্সের।
মূলত কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় দরিদ্রতর দেশগুলোকে এ টিকা দিতে আগ্রহী কোভ্যাক্স। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেছেন, আগেই আমি এ বছরের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে সব দেশের কাছে টিকা পাঠানো নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছিলাম; কিন্তু ডেটলাইনের আর মাত্র ১৫ দিন বাকি থাকলেও ৩৬টি দেশ এখনো তাদের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য টিকা পায়নি। ফলে তাদের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে।
এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন না পাওয়া ৩৬ দেশের মধ্যে ১৬টিতে অবশ্য আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে টিকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে। কিন্তু বাকি ২০টি দেশ এখনো ভ্যাকসিন সংগ্রহ বা এ-সংক্রান্ত কার্যকর কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে সমর্থ হয়নি।
শিশুদের ওপর টিকা পরীক্ষা শুরু করল ফাইজার : করোনাভাইরাসের টিকা শিশুদের ওপর পরীক্ষা শুরু করেছে ফাইজার-বায়োএনটেক। জানা গেছে, তাদের তৈরি করোনা টিকা ১২ বছরের কম বয়সীদের ওপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফাইজার-বায়োএনটেক-এর প্রত্যাশা, টিকা দেয়ার বয়সসীমা ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। গত বুধবার থেকে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ফাইজারের মুখপাত্র শ্যারন কাস্টিলো এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের ওপর এই টিকা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এই পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে।
অন্য দিকে করোনাভাইরাসের টিকা শিশুদের ওপর পরীক্ষা শুরু করেছে মডার্না। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার-বায়োএনটেক-এর তৈরি করোনা টিকা ১৬-১৭ বছরের শিশুদের দেয়া হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকা অনুমোদন দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তার কয়েক দিনের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে টিকা দেয়া শুরু হয়।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মহারাষ্ট্রে রাতে কারফিউ : ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইসহ পুরো মহারাষ্ট্র রাজ্য এখন করোনার সবচেয়ে বড় হটস্পট। গত চার দিনে এ রাজ্যে এক লাখের বেশি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের লাগাম টানতে মহারাষ্ট্রজুড়ে রাতে কারফিউ জারি করেছে রাজ্য সরকার। একই সাথে শপিং মল চালু রাখার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের দফতর থেকে শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতিতে রাজ্যজুড়ে রাতে কারফিউ জারির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ রোববার থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে। একই সাথে মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত শপিং মল বন্ধ রাখতে হবে।
জনসাধারণকে করোনার সংক্রমণ মোকাবেলায় সতর্ক থাকতে এবং সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে প্রয়োজনে জেলা শাসকেরা স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন দিতে পারবেন। তবে রাজ্যজুড়ে একসাথে লকডাউন ঘোষণার পরিকল্পনা আপাতত নেই। এ বিষয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘আমি লকডাউন দিতে চাই না। তবে করোনার সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।’
করোনাক্রান্ত ইমরান বৈঠকে, সমালোচনার ঝড় : করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর যখন কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা, সে সময় মিডিয়া টিমের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করলেন ইমরান খান। এ খবর প্রকাশের পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা বলছেন, দুনিয়াজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করা রোগটির তৃতীয় ঢেউ যখন চলছে, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। বৈঠকে যোগ দেয়া সবার বিরুদ্ধে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার দুই দিনের মাথায় ২০ মার্চ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইমরান খান বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদের বানিগালা বাসভবনে মিডিয়া টিমের সদস্যদের সাথে ওই বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেন দুই সিনেটর শিবলী ফারাজ ও ফয়সাল জাভেদ। তারা ওই বৈঠকের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা শুরু হয়।
ব্রাজিলে করোনায় মৃত্যুকে গণহত্যার সাথে তুলনা : ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে ব্যাপক প্রাণহানিকে ভয়াবহ গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা। এরই মধ্যে দেশটিতে করোনায় তিন লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘শুধু গত মঙ্গলবারই ব্রাজিলে কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিন হাজার ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি আমাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণহত্যা।’ ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো করোনা মহামারী নিয়ে জনগণের কাছে মিথ্যাচার করেছেন বলেও মন্তব্য করেন লুলা দ্য সিলভা। তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই ব্রাজিলের মানুষকে এই কোভিড-১৯-এর প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে হবে। এই লোক (বলসোনারো) যদি এভাবে চালাতে থাকে তাহলে ব্রাজিলের মানুষ তা সহ্য করবে না।