জান্তার আক্রশে মিয়ানমারে মৃত্যু ৬শ ছাড়িয়েছে

জান্তার আক্রশে মিয়ানমারে মৃত্যু ৬শ ছাড়িয়েছে

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল মায়ানমারের দাওয়েতে- ছবি: রয়টার্স

সপ্তাহখানেক আগেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার জনজাতি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি সেনা-বিরোধী বিক্ষোভে দেশের গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল। সেই মতো এ বার সেনা-পুলিশের গুলি বর্ষণের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। যদিও গত দু’দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মোট ২৩ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।

উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের তাজ শহরে গতকাল মারা যান ১১ জন বিক্ষোভকারী। এর এগের দিন তাজের কাছেই কালে শহরে মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের। গতকাল তাজে শহরে গুলিতে আহত হয়েছেন ২০ জন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, সকালের দিকে বিক্ষোভকারীরা যখন মিছিলের জন্য জমায়েত শুরু করছেন, প্রায় ছ’টি ট্রাক ভর্তি সেনা সেখানে হাজির হয়। বিক্ষোভকারীরা গাদাবন্দুক, ছুরি আর বোতল বোমা নিয়ে প্রত্যাঘাত করলে আরও পাঁচ ট্রাক বাহিনী আসে। এর পরেই চলে নির্বিচারে গুলি। হিয়েন মিন তেইক নামে এক যুবক জানালেন, এই দুই এলাকাই জঙ্গল-ঘেরা। তাই এখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই শিকার জানেন। তাঁরাই এখন আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বিক্ষোভকারীদের সাহায্য করছেন। সেনা-বিরোধী সিআরপিএইচ জোটের পক্ষ থেকে দেশের সাবেক এক মন্ত্রী সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিজেদের প্রাণ ও অধিকার রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষ প্রত্যাঘাত করবেনই।

গুলি চালনার পরে নিহত বিক্ষোভকারীর মোট সংখ্যা ৬০০ পেরিয়ে গিয়েছে। পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন প্রায় তিন হাজার প্রতিবাদী।

সেনা-বিরোধী বিক্ষোভকে সমর্থন জানানোয় সমগ্র দেশে একশোরও বেশি শিল্পীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাইং তাকোন নামে বছর চব্বিশের এক অভিনেতাকে তাঁর ইয়াঙ্গনের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সেনা। তাঁর বোন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিনেতা কয়েক দিন ইয়াঙ্গনে বাবা-মায়ের বাড়িতে ছিলেন। আজ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ সেনার ৮টি গাড়ি ও ৫০ জন সেনা তাঁদের বাড়ি ঘিরে ফেলে। তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা তাঁর পরিবার জানে না।

এ দিকে, ব্রিটেনে মায়ানমারের দূত কিয়ায়ো জোয়ার মিন জানিয়েছেন, তাঁকে তাঁর লন্ডনের দূতাবাসে ঢুকতে দিচ্ছে না সেনা-ঘনিষ্ঠেরা। গত মাসেই আটক এনএলডি নেতৃত্বের মুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। গত কাল লন্ডনে মায়ানমারের দূতাবাসে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। মিনের বার্তা টুইট করে ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাব লিখেছেন, ‘‘এক মাত্র কূটনীতির মাধ্যমেই এই অচলাবস্থা কাটা সম্ভব।’’ -আনন্দবাজর