দিন শেষে টাইগারদের বিপক্ষে বড় স্কোরের পথে শ্রীলঙ্কা

দিন শেষে টাইগারদের বিপক্ষে বড় স্কোরের পথে শ্রীলঙ্কা

জোড়া সেঞ্চুরিতে টাইগারদের বিপক্ষে বড় স্কোরের পথে শ্রীলঙ্কা - ছবি : সংগৃহীতজোড়া সেঞ্চুরিতে টাইগারদের বিপক্ষে বড় স্কোরের পথে শ্রীলঙ্কা - ছবি : সংগৃহীত

পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে বড় স্কোরের পথে রয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। জোড়া সেঞ্চুরিতে দিন শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৯১ রান। সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও ওশাদা ফার্নান্দো।

সারা দিনে বাংলাদেশের সাফল্য মাত্র এক উইকেট। সেই উইকেট নেন অভিষেক ম্যাচে মাঠে নামা বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম।

প্রথম টেস্টে টসে জিতেছিল বাংলাদেশ। অনুমিতভাবে মুমিনুল নিয়েছিলেন ব্যাটিং। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে মুদ্রা নিক্ষেপে ভাগ্য সহায় হয়নি বাংলাদেশের। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। ব্যাট করতে নেমে সারা দিনই কর্তৃত্ব দেখিয়েছে স্বাগতিকরা।

২৭ ওভারের প্রথম সেশনে ৬৬ রান তুলে স্বাগতিকরা। প্রথম সেশনে উইকেট পেতেও পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের ভুলেই তা হয়নি। ২০তম ওভারে দুটি সুযোগ তৈরি করেন দারুণ বোলিং করতে থাকা আসা তাসকিন আহমেদ। প্রথম টেস্টে তিন উইকেট নেয়া ডানহাতি এই পেসার সুযোগ তৈরি করলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশের ফিল্ডাররা।

২০তম ওভারের তৃতীয় বলে সুযোগ তৈরি হয়। যদিও করুনারত্নের তোলা ক্যাচ নিতে পারেননি মুমিনুল হক। একটু কঠিন থাকায় ক্যাচ নেয়ার চেষ্টাই করেননি তিনি।

ওভারের শেষ বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে করুনারত্নেকে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তাসকিন। এবারও বেঁচে যান লঙ্কান অধিনায়ক। তার তোলা সহজ ক্যাচ ফেলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৮ রানে ব্যাটিং করা করুনারত্নে এক ওভারেই দুইবার বেঁচে যান।

প্রথম সেশনে দাপট দেখানো এই দুই ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় সেশনও নিজেদের করে নেন। তৃতীয় সেশনে গিয়ে পড়ে প্রথম উইকেট। ততক্ষণে সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন করুনারত্নে। এরপর সেঞ্চুরি করে দিন শেষে অপরাজিত থাকেন লাহিরু থিরিমান্নে।

উইকেট যখন পড়ছিলই না তখন চমক দেখান বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেসার শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শিকারে পরিণত হওয়ার আগে সেঞ্চুরি তুলে নেন লঙ্কান অধিনায়ক। ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৯০ বলে ১৫টি চারে ১১৮ রান করে আউট হন।

উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হন ২০৯ রানে। তাতে ধরা দিয়েছে রেকর্ডও। বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে এই প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেল শ্রীলঙ্কা। দুজনে ছাড়িয়ে গেছেন প্রায় ২০ বছর আগের জুটিকে। ২০০১ সালে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ১৪৪ রানের জুটি গড়েছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া ও মারভান আতাপাত্তু। সেটিই ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কান উদ্বোধনী জুটির আগের সেরা।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কানদের এটি নবম ডাবল সেঞ্চুরি জুটি। এখানে শ্রীলঙ্কা স্পর্শ করেছে একটি রেকর্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯টি দ্বিশতক জুটি আছে দক্ষিণ আফ্রিকারও। চারটি করে ২০০ রানের জুটি আছে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের।

করুনারত্নের বিদায়ের পর দিনের বাকি সময়টা ফার্নান্দোর সাথে কাটিয়ে দিয়েছেন লাহিরু থিরিমান্নে। ২১২ বলে ১১টি চারে তিনি পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১৩১ রানে। ২৫৩ বলের ইনিংসে থিরিমান্নে হাঁকান ১৪টি চার। তার সাথে অপরাজিত আছেন ওশাদা ফার্নান্দো। ৯৮ বলে ৪০ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ওভার করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২২ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৬৭ রান। পাননি উইকেটের দেখা। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেট শিকারী অভিষেকে নামা শরিফুল ইসলাম। ১৬ ওভারে তিন মেডেনে ৫২ রানে তিনি নেন এক উইকেট।

তাসকিন ১৭ ওভারে দিয়েছেন ৬৯ রান, মেডেন তিনটি। আবু জায়েদ রাহি ১৬ ওভারে তিন মেডেনে দেন ৪৭ রান। কার্যকরী স্পিনার তাইজুল ইসলাম ১৯ ওভারে দুই মেডেনে দেন ৫৬ রান। পাননি উইকেটের দেখা।