কঙ্গোতে অগ্নুৎপাত : স্থানীয়দের গোমা ছাড়ার অনুরোধ

কঙ্গোতে অগ্নুৎপাত : স্থানীয়দের গোমা ছাড়ার অনুরোধ

ছবি : সংগৃহীত

নাইরাগঙ্গো অগ্নেয়গিরি’র কাছাকাছি পূর্বাঞ্চলীয় গোমা শহরের বাসিন্দাদের সারে যাওয়ার অনুরোধ করেছে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ (ডিআর) কঙ্গো কর্তৃপক্ষ।

পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে শনিবার গভীর রাতে অগ্নুৎপাতের ফলে পর্বতের জ্বালামুখ লাভা বেরিয়ে আসছিল। এতে আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষ ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে গোমা বিমানবন্দরে জমায়েত হয়। অনেকে আবার পায়ে হেঁটে রুয়ান্ডার সীমান্তের দিকে রওনা দেন।

এর আগে সর্বশেষ ২০০২ সালে নাইরাগঙ্গোতে অগ্নুৎপাত হয়েছিল। তখন ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া বাস্তচ্যুত্য ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এটি বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসাবে বিবেচিত।

তার আগে বিস্ফোরণ হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সে সময় মারা গিয়েছিলেন ৬ শতাধিক মানুষ। কেরিন এমবালা নামে শহরের এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বাতাসে সালফারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সামান্য দূরেই পাহাড় থেকে আসা আগুনের শিখা দেখা যায়।

প্রায় ২০ বছর নীরব থাকার পর হঠাৎ নাইনাগঙ্গো সক্রিয় হয়ে ওঠায় গোমা শহরের মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র আতঙ্ক। জাচারি পালুকু নামে গোমার এক বাসিন্দা মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) কে জানান, ‘আমরা ব্যাপক মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকেই আতঙ্কগ্রস্ত। সবই ছুটছে। আমরা সত্যিই জানি না আমাদের কী করা উচিত আসলে।’

গোমার বাসিন্দা দারিও তেড়েস্কো বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, জ্বালমুখ ছাড়াও এর কাছে পর্বতের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ফাটল থেকেও নিঃসৃত হচ্ছে লাভা। পর্বতের যে দিকের ফাটল লাভা বের হচ্ছে, সেটি অব্যাহত থাকলে শহরের বিমানবন্দর পর্যন্ত লাভা এসে পড়তে পারে।

রোববার কঙ্গোর যোগাযোগ মন্ত্রী প্যাটট্রিক মুইয়াইয়া এক টুইট বার্তায় বলেন, গোমা শহরকে খালি করার ঘোষণা কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।

কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশের সামরিক গভর্নরের দফতর থেকে বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগ্নেয়গিরিটি বিস্ফোরিত হয়। কর্তৃপক্ষ গোমার বাসিন্দাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

নাইরাগঙ্গো বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু গত কয়েক বছর এর গতিবিধি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছে না গোমা আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা; কারণ, এই প্রকল্পটি ওয়ার্ল্ডব্যাংকের দানের টাকায় চলত এবং দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকবছর আগে ওয়ার্ল্ডব্যাংক প্রকল্পে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়।

উল্লেখ্য যে গোমা শহর থেকে নাইরাগঙ্গো আগ্নেয় পর্বতের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল)।

সূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি