প্রফেসর ড.মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ(২৭ মে ২০১১)

প্রফেসর ড.মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ(২৭ মে  ২০১১)

প্রফেসর ড.মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ(২৭ মে ২০১১)-

প্রফেসর ড.আ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম সিদ্দীকী 

ড. মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ তিনি ১৯৪৭ সালে ১ মার্চ নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার আবু তুরাব নগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত দ্বীনি পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা মৌলভী মোবারক উল্লাহ। মাতা শাফিয়া খাতুন।

তিনি চাটখিল ইসলামিয়া মাদরাসা থেকে ১৯৫৮ সালে ২য় বিভাগে দাখিল, ১৯৬০ সালে ১ম বিভাগে (৩য় স্থান) ফাজিল কারামাতিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ১৯৬৪ সালে ১ম শ্রেণীতে (১ম স্থান) কামিল (হাদীস) পাশ করেন। চট্টগ্রামের এম.ই. এম. ণৈশ কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে ২য় বিভাগে বি.এ. পাশকরেন। ১৯৭২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে আরবী বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণীতে (১ম স্থান) এম.এ (প্রিভিয়াস) পাশ করেন। একই বছর ১৯৭২ সালে মোস্তফাবিয়া আলিয়া মাদরাসা, বগুড়া থেকে ১ম শ্রেণীতে (১ম স্থান) কামিল (তাফসীর) পাশ করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণীতে (২য় স্থান) এম,এ ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে ওয়াজেদিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম থেকে ১ম শ্রেণীতে (২য় স্থান) কামিল (ফিকাহ) পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে ১ম শেণীতে (২য় স্থান) এম,এ, ডিগ্রী অর্জন করেন। এর পর ১৯৮৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডঃ মুজীবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ‘‘ইমাম তাহাবীর জীবনী : হাদিস শাস্ত্রে তাঁর অবদান’’ ডি.এইচ-ডি ডিগ্রী লাভ করেন।
 
ডঃ মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ ছাত্র জীবন শেষ হওয়ার পূর্বেই চাকুরী নিয়ে কর্ম জীবনে প্রবেশ করেন। চাকুরীর পাশাপাশি ছাত্র জীবনের পড়ালেখাও চালিয়ে যান। ১৯৬৪ সালে কামিল হাদিস পাশ করার পর রংপুরের শরালিয়া সিনিয়র মাদরাসা সুপার পদে চাকুরী নিয়ে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত সেখানে চাকুরী করেন। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত কুড়িগ্রাম সাত দরগাহ আলিয়া মাদরাসায় হেড মুহাদ্দিস পদে চাকুরী করেন। এরপর ১৯৭১ সালে ৬ মাস সিলেটের সৎপুর আলিয়া মাদরাসায় মুহাদ্দিস পদে চাকুরী করেন। ১৯৭২-১৯৭৬ সাল রংপুরের কারামাতিয়া আলিয়া মাদরাসায় হেড মুহাদ্দিস হেড মুহাদ্দিস পদে চাকুরী করেন। ১৯৭৬ সালের ১৫ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা বিভাগের আরবী বিষয়ের প্রভাষক ছিলেন। ১৯৭৯ সালে আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হন। ১৯৭৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর (বর্তমান কুষ্টিয়া) আল-কুরআন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সভাপতি হিসেবে যোগদান করেন (লিয়েন ছুটিতে)। ১৯৭৯ সালে তিনি পুনরায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগে সহকারী পদে যোগদান করে ১৯৯১ সালে আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হন এবং ১৯৯৩ সালে প্রফেসর হওয়ার গৌরব লাভ করেন। ১৯৯৩ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে ১৯৯৬ সালের ৪ ঠা জানুয়ারী পর্যন্ত ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে মা ও স্ত্রী সহ হজ্জব্রত পালন করেন।  

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছাড়া সকল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যত পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন বাংলাদেশের আর কোন শিক্ষক এতো পদে ছিলেন না। তিনি  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (১) আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ (২) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ছাড়াও ,  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজী অনুষদাধীন (৩) আল-কুরআন ওয়া উলূমুল কুরআন বিভাগ,(৪)উলূমুত তাওহীদ ওয়াদ দাওয়াহ বিভাগের চেয়ারম্যান, আল কানুনু ওয়াশ শরীয়াহ অনুষদাধীন  (৫)আইন ও মুসলিম বিদান বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদাধীন (৬)হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান (৭)  থিওলজী এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুদের ডীন (৮) প্রথম আবাসিক হলের প্রভোষ্ট (৯)ছাত্র উপদেষ্টা এবং (১০)রেজিষ্ট্রার এ মোট ১০ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

গবেষণা কর্ম : (ক) ড. মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ একজন বিশিষ্ট লেখক, গবেণা ও শিক্ষাবিদ। তাঁর অধীনে এ পর্যšত মাস্টার্স পর্যায়ের ১৩ জন এম.ফিল পর্যায়ের ৩ জন ও পি. এইচ. ডি পর্যায়ে ১৩ গবেষক গবেষণা করেছেন। তিনি ৪০ টি গবেষণা মূলক প্রব›ন্ধ ৬ টি বই লিখেছেন।  ১. ইমাম তাহাভী জীবন ও কর্ম (১৯৯৮)। ২. উলূমুল কুরআন (২০০১)। ৩. হাদীস শাস্ত্রের ইতিবৃত্ত (২০০১)। ৪. কুরআন ও হাদীসের আলোকে জিন জাতি ও ইবলিস (২০০২)। ৫. বুখারী শরীফের ব্যাখ্যা  ৬. তিরমিযি শরীফের ব্যাখ্যা। তিনি ২০১১ সালের ২৭ মে  ইন্তিকাল করেন।

লেখক: অধ্যপক, আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
          ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।