৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বাধা কাটল

৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বাধা কাটল

৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বাধা কাটল

৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের সুপারিশের জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির ওপর দেয়া স্থগিতের আদেশ সংশোধনপূর্বক রি-কল (প্রত্যাহার) করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে এনটিআরসিএ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার প্রার্থীকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধ আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। এনটিআরসিএ’র পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভূইয়া এবং রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ও ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ।

পরে ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ জানান, আদালত ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিতের আদেশ মোডিফিকেশন পূর্বক রি-কল করেছেন। ফলে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করতে বাধা নেই। তবে রিটকারী প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার নিবন্ধনধারীকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে বলেছেন আদালত। ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ না থাকলেও রিটকারী এসব প্রার্থীর নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় শুন্যপদগুলোর ওপর স্থগিতাদেশ থাকবে বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, ১৬৬টি রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ প্রথম থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে একটি জাতীয় মেধাতালিকা তৈরিসহ মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগের সুপারিশ করতে সাত দফার গাইডলাইন দেন। ওই রায়ে বলা হয়, এনটিআরসিএ নিয়োগের উদ্দেশ্যে যদি কোনো সুপারিশ করে তবে তা ৬০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। সনদধারীদের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সনদ বহাল থাকবে।

এই রায়ের পর ২০১৮ সালে জাতীয় মেধা তালিকা তৈরি করে ওই তালিকার ভিত্তিতে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এরপর বাকিদের নিয়ে মেধা তালিকা হালনাগাদ করে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এনটিআরসিএ সেটা না করে ১৩তম থেকে ১৬তম পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা নেন। এতে করে একদিকে এক থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীরা তো নিয়োগ পায়নি, অন্যদিকে নিয়োগ প্রত্যাশীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

এ অবস্থায় ২০১৭ সালের ওই রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগে ২০১৯ সালে আদালত অবমাননার আবেদন করেন রিটকারীরা। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ৩০ হাজার প্রার্থীর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে এনটিআরসিএ এমন খবরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রাকাশ থেকে বিরত থাকতে একটি আবেদন করে রিটকারীরা।

এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এরপর সর্বশেষ গত ৬ মে এনটিআরসিএ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গত ৩০ মার্চ ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগ দিয়ে এনটিআরসিএ’র জারি করা তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম এসময় পর্যন্ত স্থগিত রাখারও আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিষয়টির ওপর শুনানি হয়।

সূত্র : ইউএনবি