পাবিপ্রবির প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত : তদন্ত কমিটি গঠন, কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি শুরু

পাবিপ্রবির প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত : তদন্ত কমিটি গঠন, কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি শুরু

পাবিপ্রবির প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত : তদন্ত কমিটি গঠন, কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি শুরু

উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের চাঁদা পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে পাবনা বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাবিপ্রবি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অফিসার্স এসোসিয়েশন এর নেতারা চাঁদা না পেয়ে তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে। অপরদিকে প্রধান প্রকৌশলীর অব্যাহতির দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছে পাবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশন। প্রকৌশল দপ্তর ও অফিসার্স এসোসিয়েশনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

পাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার বিজয় কুমার ব্রহ্ম কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের সত্যত্যা নিশ্চিত করে বলেন,‘ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের পত্রই আমরা পেয়েছি। প্রকৌশল দপ্তরের লিখিত পত্রে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামকে তার কক্ষে গিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। তার গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়া হয়। পিকনিকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের নিকট থেকে চাঁদাবজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগগুলো স্পর্শকাতর হওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই তদন্ত টিমে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক কামরুজ্জামানকে আহবায়ক এবং আমাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল আলম, ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুল্লাাহ। তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে’।

এদিকে গতকাল রবিবার পাবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ রেজিস্ট্রার অফিস ঘেরাও করে। তারা ভারপ্রাপ্ত  রেজিস্টার বিজয় কুমার ব্রহ্মকে বের করে দিয়ে তার কক্ষে তালা দিয়েছে। তারা প্রধান প্রকৌশলীর অব্যাহতি দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে। কর্মবিরতির কারণে রবিবার ক্যাম্পাসে কোন কাজ হয়নি।

পাবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের অর্থ অপচয় রোধ ও চলমান ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে নানা অনিয়ম এবং সেসব অনিয়মের বৈধতা দিতে ভুয়া বিল ভাউচারে কর্মকর্তাদের সাক্ষরে বাধ্য করার প্রতিবাদে আমরা প্রধান প্রকৗশলী আমিনুল ইসলামের অব্যাহতি চেয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা রবিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছি।

এ ব্যাপারে পাবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী জানান, “পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ি প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে”।

উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন ঠিকাদারদের নিকট চাঁদাবজির প্রতিবাদ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রধান প্রকৌশলী প্রশাসন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। অপরদিকে প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা  লোপাটের অভিযোগ তুলে তার অব্যহতি দাবী করেছেন অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। গেল কয়েক দিন ধরে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকান্ডে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।