ইবিতে ৮ দিনেও কাটেনি টিকা নিবন্ধন জটিলতা

ইবিতে ৮ দিনেও কাটেনি টিকা নিবন্ধন জটিলতা

ইবিতে ৮ দিনেও কাটেনি টিকা নিবন্ধন জটিলতা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকা নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের নির্দেশনা দেওয়ার আট দিন পেরোলেও নিবন্ধন করতে পারছেন না তারা।  একই জটিলতার মুখে পড়েছেন শিক্ষকরাও।

এ ক্ষেত্রে ইউজিসি থেকে টেকনিক্যাল সমস্যাকে দায়ী করা হলেও তা সমাধানে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ছাড়া নিবন্ধন জটিলতার কারণে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারানোর কথাও জানান অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুলাই ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারী করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা সংক্রান্ত ফরম পূরণকারীসহ সকল আবাসিক শিক্ষার্থীকে এনআইডি কার্ডের নম্বরসহ সঠিক তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর থেকেই  শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিবন্ধনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। সমস্যার কারণ হিসেবে ইউজিসির পক্ষ থেকে ৫ জুলাই দেওয়া নতুন এক বিজ্ঞপ্তিতে সার্ভারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য প্রেরণজনিত ত্রুটিকে দায়ী করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করাসহ তিন দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ইউজিসির নির্দেশনার আলোকে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

যথাযথ নির্দেশনা না দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসান শোভন বলেন, ‘এর আগেও কয়েক ধাপে রেজিস্ট্রেশন করেছি। সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের বিজ্ঞপ্তি দেখার পরপরই চেষ্টা করেছি। বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছি। এখন যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না যায় তাহলে আগেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো কেন?’

এদিকে, নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর প্রয়োজনীয় হওয়ায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে যাদের পরিচয় পত্র নেই তারাও নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহানা ঈশিতা বলেন, ‘আমার জাতীয় পরিচয় পত্র নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরমে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করেছিলাম। তবে সুরক্ষা অ্যাপে জন্মসনদের কোনো অপশন নেই। টিকা নেয়ার ইচ্ছা থাকলেও আবেদন করার সুযোগই পাচ্ছি না।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে টিকা প্রদানের দাবি জানান। এ ছাড়া গত একাডেমিক কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদুল আজহার পর সশরীরের পরীক্ষা শুরু হলে শিক্ষার্থীদের একই শ্রেণিকক্ষে বসে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে, তাই আবাসিক ও অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীকেই দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা প্রদানের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আমি নিজেও কয়েকবার চেষ্টা করে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারিনি। নিবন্ধনের এই জটিলতার জন্য শিক্ষার্থীদের টিকার প্রতি আগ্রহ কমছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরমে  আমার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মাত্র এক তৃতীয়াংশ নিবন্ধন করেছে। শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে হলে নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে জটিলতামুক্ত করতে হবে ও বিশ্ববিদ্যালয় তত্ত্বাবধানে টিকা প্রদান করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান বলেন, আমরা যথাযথভাবেই ইউজিসিকে তথ্য পাঠিয়েছিলাম। এরপরও শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনে সমস্যার কথা জানিয়েছি। তারা সর্বশেষ জানিয়েছে সার্ভারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য আপডেট না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন করতে পারছেনা। তথ্য আপডেট হতে আরো দুই তিনদিন সময় লাগবে।'