ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের সফর আজ

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের সফর আজ

সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা তিন দিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন। একই দিন আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ উপদেষ্টা (আন্ডার সেক্রেটারি পদমর্যাদার) ডেরেক শোলে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকায় এটি হবে বিনয় মোহন কোয়াত্রার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। তিনি গত বছর এপ্রিলে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন।

বিনয় মোহন কোয়াত্রা আজ রাতে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছবেন। পরদিন সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে তার ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এরপর কোয়াত্রা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। রাতে তার সম্মানে ভারতীয় হাইকমিশনারের দেয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়ে যাবেন।

এবারের এফওসিতে দুই দেশের মধ্যে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ, ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতাধীন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি, সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বা সোপা সইয়ের প্রস্তুতি, নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বশেষ এফওসি ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ভারত জি-২০’র সভাপতিত্বকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অতিথি হিসেবে আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১ ও ২ মার্চ দিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অতিথি হিসেবে অংশ নিতে পারেন ড. মোমেন। আর প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক ঢাকায় হওয়ার কথা রয়েছে। এ সব নিয়েও কোয়াত্রার সফরে আলোচনা হবে।

অন্য দিকে ডেরেক শোলের সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রাধান্য পাবে। তার সফরের আগেই ইউএসএআইডির একটি অগ্রবর্তী দল বাংলাদেশে এসেছে। দলটি গত রোববার কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়েছিল। সেখানকার পরিস্থিতি সরজমিনে দেখে আজ ঢাকা ফিরে তারা ডেরেক শোলের কর্মসূচিতে যুক্ত হবে। এ ছাড়া ডেরেক শোলের সফরে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস), দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় বাংলাদেশ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) এবং এর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওপর গুরুত্ব দিবে।

ঢাকা সফরের আগে বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডেরেক শোলে বলেন, আইপিএসে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ পর্যায়ের সফরের ধারাবাহিকতায় আমি বাংলাদেশে আসছি।
বাংলাদেশে অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র নিখুঁত নয়। তবে আমরা নিজেদের আরো ভালো করার এবং উন্নত করার চেষ্টা সবসময় করে যাচ্ছি। এ কারণে আমরা যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচন, সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরি, তখন সেটা আমরা অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্বের জায়গা থেকে করে থাকি।

যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়া অব্যাহত রাখবে বলে জানান ডেরেক শোলে।