ইবিতে র‌্যাগিং ও ভিডিও ধারণ : আতঙ্কে গণরুম ছাড়ছেন ছাত্রীরা

ইবিতে র‌্যাগিং ও ভিডিও ধারণ : আতঙ্কে গণরুম ছাড়ছেন ছাত্রীরা

ইবিতে র‌্যাগিং ও ভিডিও ধারণ : আতঙ্কে গণরুম ছাড়ছেন ছাত্রীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক ছাত্রীকে র‌্যাগিং ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে রিট হলে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার এক সহযোগীকে তদন্ত চলাকালীন ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এ নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ওই দুইজন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মৌখিক নির্দেশে অভিযুক্তদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছি। তারা সন্ধ্যার পর হল ছেড়ে চলে গেছেন।’

তিন তদন্ত কমিটির একটিরও তদন্ত শুরু হয়নি:
এ ঘটনায় বুধবার পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। তবে একদিন পেরিয়ে গেলেও তদন্ত কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি তারা। এ ছাড়া একইদিনে শাখা ছাত্রলীগও চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারাও কাজ শুরু করেননি। তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান কার্যদিবসে তদন্তের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাস সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়নি। আগামী শনিবার থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে। 

আতঙ্কে গণরুম ছাড়ছেন ছাত্রীরা:
এ ঘটনার পর গণরুমে থাকা ছাত্রীরা আতঙ্কে হল ছাড়ছেন বলে জানিয়েছেন হলে থাকা ছাত্রীরা। তারা জানান, গণরুমের অনেকেই হল ছেড়ে চলে গেছেন। এছাড়াও আবাসিক ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেককেই বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের নবীন শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনায় পরিবার জানতে পেরে বাসায় যেতে বলেছে। এজন্য বাসায় যাচ্ছি। এছাড়াও হলে ভীতিকর পরিবেশ তৈরী হয়েছে। এমন পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

অভিযুক্ত নেত্রীকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি:
তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীকে সাংগঠনিক সব ধরণের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেত্রী কোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। তদন্তে ওই দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবো। 

প্রতিবাদ অব্যাহত:
র‌্যাগিং ও ভিডিও ধারণের এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ও শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পৃথক বিবৃতিতে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শাস্তির দাবি করেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকেও শাস্তির প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। 

মামলার পরিকল্পনা ভূক্তভোগীর পরিবারের:
নির্যাতনের ঘটনায় ভূক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন মামলা করা হয়নি। তবে মামলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীর পরিবার। ভূক্তভোগী ছাত্রী প্রতিবেদককে বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছিনা কবে মামলা করা হবে।