মার্কিন নতুন ভিসানীতি: রাজনীতিতে তোলপাড়

মার্কিন নতুন ভিসানীতি: রাজনীতিতে তোলপাড়

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বাধাগ্রস্ত করবে বা গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করবে, তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বিধিনিষেধ জারি করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। একইসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়েও এ তথ্য নিশ্চিত করেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এ ঘটনার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জানিয়েছে এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক। একইসঙ্গে সরকার বিরোধী বিএনপি ও জাতীয় পার্টিও এ ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে নতুন মার্কিন ভিসানীতি বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে জলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। রাজনৈতিক মহল একে অন্যের উপর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে বিষয়টিকে ভাবলেও নির্বাচনে সহিংসতা বা বাধা সৃষ্টিকারী আদেশদাতা ও বাস্তবায়নকারী সবাই এর আওতাভুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এক্ষেত্রে সরকার বা বিরোধী যে কেউ এর আওতায় পড়তে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ভিসানীতির কথা দিনভর রাজনীতির মাঠে আলোচনায় থাকলেও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এ ভিসানীতির ফলে বিএনপি এবার সচেতন হবে, বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য সতর্কবার্তা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে’ যারা আগুন দিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে তাদের ‘খবর আছে’। অন্যদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, তাদের আমাদের নয়, ‘খবর আছে’ আওয়ামী লীগ সরকারের।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং নির্বাচনের সঙ্গে সং‌শ্লিষ্টদের জন্য প্রযোজ্য বলে জা‌নিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মা‌র্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৃহস্প‌তিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মো‌মে‌নের স‌ঙ্গে বৈঠ‌কের পর সাংবা‌দিক‌দের মু‌খোমু‌খি হ‌য়ে এসব কথা ব‌লেন রাষ্ট্রদূত।

পিটার হাস বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানী‌তির ঘোষণা নি‌য়ে আমরা আলোচনা ক‌রে‌ছি। এটা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং যারা এই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত তাদের জন্য প্রযোজ্য। যুক্তরাষ্ট্র সবসময় গণতা‌ন্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া‌কে সমর্থন ক‌রে ব‌লেও এসময় উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত হাস।

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে বুধবার নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এর আগে দুপুরে গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের স‌ঙ্গে বৈঠক ক‌রে‌ছেন।

পরে মার্কিন দূতাবাসের ফেসবু‌ক পেজে দেয়া এক পো‌স্টে জানা‌নো হয়, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন ব্যক্তিদের ভিসা সীমিত করার এ নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বাধাগ্রস্ত করবে বা গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করবে, তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বিধিনিষেধ জারি করবে বলে জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।